বলিপাড়ার একমাত্র অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী, যার সঙ্গে শতাধিক সিনেমায় কাজ করেছেন শক্তি কাপুর। হিন্দি ফিল্মজগতে আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে খলনায়ক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শক্তি। পর্দায় দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিলেও পর্দার পেছনে মিঠুনকে নাকি প্রচণ্ড ভয় পেতেন শক্তি কাপুর।
ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার ছাত্র ছিলেন শক্তি কাপুর। তার চেয়ে এক বছরের সিনিয়র ছিলেন মিঠুন।
১৯৭২-’৭৪ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন মিঠুন। স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে ওই কলেজেই শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন। কলেজে রাকেশ রোশন, বিনোদ খান্নার সঙ্গে বেশিরভাগ সময় কাটাতেন শক্তি। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে মিঠুনের সঙ্গে প্রথম আলাপ নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। কলেজে পড়াকালীন যে মিঠুনকে ভয় পেতেন তিনি, সে কথাও অকপটে স্বীকার করেন।
তিনি জানান, রাকেশ, বিনোদের সঙ্গে একটি ফোর্ড গাড়িতে চেপে কলেজ যাচ্ছিলেন। কলেজে পৌঁছানোর পর তিনি দেখতে পান, কলেজের মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন লম্বা চেহারার এক ব্যক্তি। টানটান চেহারা হলেও সেই ব্যক্তির পরনে ছিল ছেঁড়া লুঙ্গি। শক্তির হাতে ধরা ছিল বিয়ারের বোতল। কলেজের গেটের সামনে অচেনা ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন শক্তি। ওই ব্যক্তির কাছে গিয়ে ‘সুরাপানের’ প্রস্তাব দেন তিনি। প্রস্তাব দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শক্তির চুলের মুঠি ধরে ফেলেন ওই ব্যক্তি।
বলেন, ‘‘আমি তোমার চেয়ে এক বছরের বড়। আমাকে মদ্যপান করতে বলছ কোন সাহসে?’ তারপরেই শক্তিকে ঘিরে ধরেন তার সিনিয়ররা। শক্তির চুলের মুঠি ধরে একটি অন্ধকার ঘরের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। শক্তি কাপুর সাক্ষাৎকারে জানান, তাদের মধ্যে ছিলেন বিজয়েন্দ্র ঘাটগের মতো তারকাও। ঘরের ভেতর নিয়ে গিয়ে শক্তিকে ভয় দেখাতে শুরু করেন তারা। চোখেমুখে জলের ছিটেও দেয়া হতে থাকে শক্তিকে। সেই সময় লম্বা চুল ছিল তার। সিনিয়ররা শক্তির চুলের প্রশংসা করেন। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পর অভিনেতার সব চুল কেটে ফেলেন তারা। এমনটাই দাবি করেন শক্তি কাপুর।
পরে মিঠুনের সঙ্গে ছাত্রাবাসে একই ঘরে থাকতেন শক্তি কাপুর। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যে, মিঠুনকে শুরুর দিকে ভয় পেলেও ধীরে ধীরে সেই ভয় কেটে যায়। শক্তির মন্তব্য, পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি মিঠুন ছাড়া আর কারও কথা শোনেন না। শক্তি বলেন, ‘‘মিঠুন যদি আমার গালে চড়ও মারেন, তবুও আমি কিছু মনে করব না। অন্য কারও কথা শুনি না আমি। কিন্তু মিঠুনের কথা একবাক্যে পালন করি।’’