প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তির জন্যই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নিয়েছে।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের হোটেল রিজ কার্টলের সভাকক্ষে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আমরা কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করে।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে উদ্ধৃত করে মোমেন বলেন, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ রোল মডেল (সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে)। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি কোভিডের পরেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রেখেছে।
মন্ত্রী বলেন, তিনি (আইএমএফ এমডি) প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বলেছেন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে এ ধরনের ভিশন, এ ধরনের লিডারশিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আব্দুল মোমেন জানান, ক্রিস্টিলিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ভালো কানেকটিভিটি এবং আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, বিশেষ করে এ করোনার মধ্যেও স্থিতিশীলতা ধরে রাখার প্রশংসা করেন আইএমএফ প্রধান।
আইএমএফ প্রধানের সঙ্গে আলাপে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের এ উন্নয়ন রাতারাতি হয়নি, এটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ফসল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখন জেলে ছিলেন তখন বাংলাদেশকে কীভাবে উন্নত করবেন সেই পরিকল্পনাগুলো করেছেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের যাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, গত ১৪ বছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে আইএমএফ সব সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে; বাংলাদেশ কখনও এটি (পরামর্শ) থেকে বিচ্যুত হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আইএমএফের সঙ্গে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ মাত্র ২ সপ্তাহের আলোচনায় এটি পেয়েছে, যেখানে বহু দেশ বছরের পর বছর ধরে আলোচনা করেও এই ঋণ পায় না।
আব্দুর রউফ বলেন, আইএমএফ ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।