রাশিয়ার বিমান হামলার জবাবে পাল্টা ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। অধিকৃত ক্রিমিয়ার প্রধান শহর ও বন্দরনগরী সেভাস্তোপোলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। হামলায় ওই এলাকার একটি তেলের ডিপোতে বড় অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে। শহরের রুশপন্থি গভর্নর মিখাইল রাজভোঝায়েভের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
ইউক্রেনে গত ১৪ মাস ধরে যুদ্ধ চলছে। এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় লড়াই হচ্ছে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতে। এরই মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে রাশিয়ায় পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইউক্রেনের সেনারা। তার আগেই ইউক্রেনে ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজধানী কিয়েভসহ একাধিক শহরে বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। হামলায় শিশু ও নারীসহ অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই পাল্টা ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেনীয় বাহিনী।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, ড্রোন হামলায় বন্দরনগরী সেভাস্তোপোলের একটি তেলের ডিপোতে আগুন লাগে। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, তেলের ডিপোর ওই আগুন এখনও জ্বলছে। কিন্তু এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনায় সেভাস্তোপোলে জ্বালানি সরবরাহে বাধার সৃষ্টি হবে না।
রুশপন্থি গভর্নর মিখাইল রাজভোঝায়েভ বলেন, চারটি জ্বালানি ট্যাংকে আঘাত হেনেছে এবং সেগুলো পুরোপুরি পুড়ে গেছে। ওই এলাকার প্রায় ১১ হাজার জায়গাজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দমকল বাহিনী আগুন নেভাতে কাজ করছে।
এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে ও শহরের ওপর দিয়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলি উড়ছে।
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল ওই শহরে ২টি ড্রোন হামলা হয়েছিল। এর একটি রুশ সেনারা ধ্বংস করে, অন্যটি বন্দরের বাইরে বিস্ফোরিত হয়। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে আরটির প্রতিবেদনে জানানো হয়।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনে পরাশক্তি রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু হলে এই নৌবহর থেকে ইউক্রেনে অধিকাংশ হামলা চালানো হয়। ২০১৪ সালে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হওয়া ক্রিমিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং সেখানে রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর নৌবহর রাখা আছে।
এদিকে, সামরিক অভিযানের পর থেকে রাশিয়াকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করার অভিযোগ তুলে এর জবাব মস্কো দেবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শনিবার সেন্ট পিটার্সবার্গে আইন প্রণেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি আরও বলেন, কোনো দেশের আরোপিত নিয়ম রাশিয়া মেনে চলবে না। এদিন তিনি দেশটির সেনাবাহিনীর কর্নেল জেনারেল মিখাইল মিজিনৎসেভকে রসদবিষয়ক উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন বলে জানায় মস্কো।
অন্যদিকে, ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনসহ যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ও সামরিক সহায়তার সঠিক সংখ্যা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে পেন্টাগনকে জানাতে হবে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ।