রেফারিকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে রিয়াল মাদ্রিদকে টেনেছেন বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। এরপর বার্সা কোনো অপরাধ করেনি -এ দাবির পাশাপাশি রিয়ালকে ‘ক্ষমতাসীনদের দল’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রত্যুত্তরে রিয়ালও বার্সাকে ক্ষমতাসীনদের দল বলে আখ্যায়িত করে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের এমন কথার লড়াইয়ের মাঝেই স্পেনের দুটি সংবাদমাধ্যম চেষ্টা করেছে লাপোর্তার অভিযোগের সত্যতা বের করার।
রেফারিকে অনৈতিক উপায়ে অর্থ প্রদানের অভিযোগে বার্সেলোনা যখন বেকায়দায়, রিয়াল মাদ্রিদ চেষ্টা করছে দলটিকে আরও বেকায়দায় ফেলতে। পাল্টা অভিযোগ নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে বার্সাও। তাতে লা লিগার সঙ্গে বার্সার ঝামেলা রূপ নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বার্সেলোনা যুদ্ধে।
বার্সার সভাপতি অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, ‘আমি একটি ক্লাবের কথা বলতে চাই। ক্লাবটির নাম রিয়াল মাদ্রিদ। এ ক্লাব ঐতিহাসিকভাবে সব সময় সুবিধা পেয়ে এসেছে এবং এটা ছিল ক্ষমতাসীনদের ক্লাব। আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ৭০ বছর ধরে রেফারিদের যারা নিয়োগ দিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগ হয় রিয়ালের পরিচালক, সদস্য কিংবা খেলোয়াড় ছিলেন। সেই রিয়াল মাদ্রিদ এ মামলায় নিজেদের উপস্থাপন করেছে এভাবে যে খেলাধুলায় দুর্নীতির শিকার হচ্ছে। এটা আসলে চিন্তার দৈন্যের সর্বোচ্চ প্রকাশ।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে রিয়াল মাদ্রিদের অফিসিয়াল টিভি চ্যানেলে প্রকাশ করা হয় এক ভিডিও। যেখানে বার্সার বিপক্ষে পাল্টা অভিযোগ তুলে বলা হয়, ‘ক্যাম্প ন্যুর উদ্বোধন করেন ফ্রাঙ্কোর মন্ত্রী জোসে সলিস রুইজ। বার্সেলোনা ফ্রাঙ্কোকে ১৯৬৫ সালে সম্মানসূচক সদস্য পদ দেয় এবং তিনটি অনুষ্ঠানে তাকে পুরস্কার প্রদান করে।’
শুধু এটুকুই নয়, স্বৈরশাসক ফ্রাঙ্কো বার্সেলোনাকে তিনবার দেউলিয়া হওয়া থেকেও বাঁচিয়েছিল বলে দাবি করা হয় সে ভিডিওতে। এর ভিত্তিতে ক্যাম্প ন্যুর দলটিকেই ক্ষমতাসীনদের আসল দল বলে দাবি করে রিয়াল।
এ লড়াইয়ের মাঝেই স্পেনের দুটি সংবাদমাধ্যম ‘লা ভ্যানগার্দিয়া’ ও মুন্দো দেপোর্তিভো স্পেনের রেফারিং কমিটির সঙ্গে রিয়ালের যোগসূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। তারা একটি তালিকা তৈরি করেছে, যেখানে রেফারি কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ১০জন কোনো না কোনোভাবে রিয়ালের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই তালিকা যে বিতর্ক নতুনভাবে উসকে দেবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তালিকার সেই দশজন হলেন –
১. আলফানসো আলবেনিজ জোর্দানা- বার্সেলনা ও রিয়াল মাদ্রিদ দুই ক্লাবের হয়েই খেলেছেন। পরে রিয়ালের পরিচালকও হন।
২. কার্লোস ভিয়েস্তা ভেগা- রিয়ালের সাবেক খেলোয়াড় ও পরিচালক।
৩. লুইস কলিনা আলভারেজ- রিয়াল মাদ্রিদের সদস্য ও পরিচালক। ছিলেন রিয়ালের স্টেডিয়ামের পরিচালক।
৪. আন্তনিও দে কারসের- রিয়াল মাদ্রিদের সদস্য ও পরিচালক ছিলেন।
৫. জুলিয়ান রুয়েতে মিনুয়েসা -রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলেন। পরবর্তীতে ক্লাবটির সদস্য ও পরিচালক হন।
৬. ইউলোজিও আরাঙ্গুরেন- রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক খেলোয়াড় ছিলেন।
৭.এমিলিও সুয়ারেজ মার্সেলো- রিয়াল মাদ্রিদের সদস্য ছিলেন।
৮. লুইস সাউরা দেল পান – রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় ও ক্লাব সদস্য।
৯. আরতুরো লোপেস এসপিনোসা- রিয়াল মাদ্রিদের একাডেমির খেলোয়াড় ছিলেন। সেখান থেকে উঠে এসে পেশাদার ফুটবলার হন।
১০. হোসে প্লাজা -১৯৬৭ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত রেফারিং কমিটির প্রধান ছিলেন। রিয়ালের সাবসিডিয়ারি দল প্লাস আলট্রায় খেলেছেন। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, রেফারিং কমিটির প্রধান হিসেবে তার সময়কালে বার্সেলোনা কোনো লিগ জিততে পারবে না। তবে সে সময়ে দুবার লিগ জেতে কাতালান দলটি।