নিলামে তোলা হলো অতিকায় টিরানোসরাস রেক্স বা টি-রেক্সের একটি কঙ্কাল। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সুইজারল্যান্ডের জুরিখে আয়োজিত এক নিলামে ৫৫ লাখ সুইস ফ্রাঙ্কে (৬১ লাখ ডলার) বিক্রি হয় কঙ্কালটি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৬৪৭ কোটি ২১ লাখ টাকার সমান।
টিরানোসরাস রেক্স ডায়নোসর গোত্রের প্রাণী যা এখন থেকে ৬ কোটি ৭০ লাখ বছর আগে পৃথিবীর বুকে দাপিয়ে বেড়াত। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা ও উইমিংয়ে এমন তিনটি ভিন্ন টিরানোসরাস রেক্সের ২৯৩টি হাড় খুঁজে পাওয়া যায়।
সেই হাড়গুলো জোড়া লাগিয়েই তৈরি করা বিশাল এক কঙ্কাল যার উচ্চতা ৩.৯ মিটার বা ১২.৮ ফুট আর দৈর্ঘ্য ১১.৬ মিটার বা ৩৮.১ ফুট। তিনটি পৃথক টি-রেক্সের হাড় থেকে তৈরি, তাই এর নাম দেয়া হয় টিআরএক্স-২৯৩ ট্রিনিটি।
ট্রিনিটিকে সুইৎজ়ারল্যান্ডে আনাও এক কাহিনি। এত বড় কঙ্কাল এক দেশ থেকে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভবই ছিল। তাই কঙ্কালটিকে ভাগ করে তার বিভিন্ন অংশ ৯টি বিশালাকার বাক্সে পুরে জ়ুরিখে আনা হয়।
ইউরোপে এমন ঘটনা এই প্রথম। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) জুরিখে নিলাম তোলা হয়। কোলার অকশান্স নামক নিলাম সংস্থার পক্ষ থেকে এই নিলামের আয়োজন করা হয়।
প্রাথমিকভাবে এর দাম ৬৫ লক্ষ থেকে ৮৭ লক্ষ ডলার উঠবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশার চেয়ে কিছুটা কম দামে বিক্রি হয় কঙ্কালটি। তবে কঙ্কালটির ক্রেতার নাম ও পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
একটা গোটা টি-রেক্স ডাইনোসরের কঙ্কাল নিলামে ওঠার ঘটনা ইউরোপে প্রথম। বিশ্বে তৃতীয়। ২০২১ সালে নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র উল্লেখ করে কোলার জানায়, পৃথিবীতে যে সব প্রাণী বিচরণ করেছে, তার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ খাদক শ্রেণির প্রাণী টি-রেক্স। পুরো বিশ্বে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩২টি পূর্ণবয়স্ক টি-রেক্সের কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা ও উইমিংয়ে এর আগে আরও দুটি টি-রেক্সের কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছিল। এর মধ্যে ১৯৯৭ সালে ‘সু’ নামক একটি কঙ্কালের নিলাম হয়। তখন তার দাম উঠেছিল ৮৪ লাখ ডলার। এরপর ২০২০ সালে নিলাম সংস্থা ক্রিস্টি নিলামে তোলে ‘স্টান’-কে। তার দাম ওঠে ৩ কোটি ১৮ লাখ ডলার যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড।