ইরানের নারীরা যাতে শিক্ষার সমান সুযোগ পেয়ে সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে এবং পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারে; তার জন্য উদ্যোগ নিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
এদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট রাইসি। এ সময় তাদের মধ্যে ২২ মিনিট কথা হয়। টেলিফোন আলাপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
এ সময় নারী অধিকারের বিষয়টিও সামনে আনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, নারীর মর্যাদা সংক্রান্ত কমিশন থেকে ইরানকে অপসারণের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের (ইসিওএসওসি) প্রস্তাবে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনা স্মরণ করেন, ওআইসি ও ডি ৮-এর সদস্য হওয়ায় বাংলাদেশ ও ইরান অনেক ক্ষেত্রে একে অপরকে সমর্থন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে বিশেষ করে জাতিসংঘে ইরানকে সমর্থন বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মানবাধিকার কাউন্সিলে কানাডার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভোটের কথা উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা টেলিফোন কলের জন্য ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে ধন্যবাদ জানান এবং ইরানের নতুন প্রশাসন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সম্প্রসারণ ও সুসংহত করতে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলে প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ সত্যিকারের সম্ভাবনার চেয়ে অনেক কম ও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও ব্যবসা বাড়াতে উভয় পক্ষেরই আরও উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।’ দুই দেশের চেম্বার সংস্থার মধ্যে একটি জয়েন্ট বিজনেস কমিশন (জেবিসি) গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ চলতি বছরের কোনো এক সময়ে তেহরানে ষষ্ঠ বৈঠক আহ্বানের লক্ষ্যে কাজ করছে।’ এ বিষয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের প্ল্যাটফর্ম উভয় পক্ষকে বাণিজ্য বাধা, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও ব্যাংক লেনদেন সংশ্লিষ্ট সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করার উপায়গুলো খুঁজে পেতে সহায়তা করবে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ও ইরানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণকে পবিত্র রমজান এবং বিলম্বিত নওরোজ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানানোর জন্য, ইরানের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।