সুদান সেনাবাহিনী এবং দেশটির একটি আধাসামরিক বাহিনীর লড়াই এখন রাজধানী খার্তুমসহ বেশ কয়েকটি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৩ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, সুদানের রাষ্ট্রপতির বাসভবন, রাষ্ট্রীয় টিভি এবং সেনা সদর দফতরে ডি ফ্যাক্টো নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের অনুগত সেনা ইউনিট এবং সুদানের ডেপুটি লিডার মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে লড়াই চলছে।
সুদানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের জেট বিমান আরএসএফের ঘাঁটিতে আঘাত করছে। উভয় পক্ষই দাবি করেছে তারা বিমানবন্দর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলি নিয়ন্ত্রণ করছে। বিবিসি জানিয়েছে, রাজধানী দারফুরসহ সুদানের অন্যান্য শহরেও যুদ্ধের খবর পাওয়া গেছে।
জেনারেল দাগালো জানান, সব সেনা ঘাঁটি দখল না করা পর্যন্ত তার সৈন্যরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। জবাবে, সুদানের সশস্ত্র বাহিনী আধাসামরিক আরএসএফের বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আলোচনা বা সংলাপের কোনো সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একজন সাংবাদিক জানান, খার্তুমের রাস্তায় সাঁজোয়া যান দেখা যাচ্ছে। এছাড়া খার্তুম বিমানবন্দরে একটি বেসামরিক বিমানে আগুন দেখা গেছে। সৌদি এয়ারলাইন সৌদিয়া জানিয়েছে তাদের একটি এয়ারবাসে আগুন লেগেছে।
সৌদিয়া এবং ইজিপ্টএয়ার খার্তুমে ফ্লাইট স্থগিত করেছে। প্রতিবেশী চাদ সুদানের সাথে তার সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী কেনিয়াতে থাকা তার বোনের মাধ্যমে বিবিসিকে বলেছেন, ‘গোলাগুলি এখনও চলছে। স্থানীয়রা বাড়ির ভিতরেই অবস্থান করছে। অনেক আতঙ্ক ও ভয় রয়েছে সবার মধ্যে।’
আরএসএফ অন্তত তিনটি বিমানবন্দর, সেনাপ্রধানের বাসভবন এবং রাষ্ট্রপতির প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে। তবে জেনারেল বুরহান আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তা অস্বীকার করেছেন। রাষ্ট্রীয় টিভি স্টেশনে সংঘর্ষের খবরও রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন টিভি স্টেশনটি এখন আরএসএফ নিয়ন্ত্রণ করছে। জেনারেল দাগালো আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন জেনারেল বুরহান একজন অপরাধী। তাকে হত্যা করা হবে অথবা বিচারের মুখোমুখি হবে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় শহর মেরোওয়েতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। আরএসএফ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা গেছে মিশরীয় সৈন্যরা মেরোওয়েতে তাদের কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ করেছে। এদিকে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ সকলেই অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
আফ্রিকার দেশটিতে সাম্প্রতিক এই উত্তেজনার শুরু মূলত প্যারামিলিটারি আরএসএফকে সামরিক বাহিনীর অন্তর্ভূক্ত করা নিয়ে মতানৈক্য থেকে। আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, সুদানে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে চলমান সংঘাত মূলত ২০১৯ সাল থেকে।