পাবনার বেড়া উপজেলার কাজিরহাট নদীবন্দরের ড্রেজিংকৃত বালু অবাধে বিক্রির মহোৎসব চলছে। পাবনা-২ আসনের (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের নামে এসব বালু বিক্রি করছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম মোহনের ছেলে আমিরুল ইসলাম শাহীন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিআইডব্লিউটির নির্দেশনা অনুযায়ী ড্রেজিংকৃত বালু মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, কবরস্থান ও স্কুল-কলেজে বিনা মূল্যে দেয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু মসজিদ মাদ্রাসা, এতিমখানা, কবরস্থানে বালু দুই থেকে চার ট্রাক দিয়ে বাকি সব বালু বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন বসতবাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে।
জানা যায়, পাবনা-২ আসনের (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের (এমপি) নামে জনস্বার্থে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য অনুমোদন দেয় বিআইডব্লিউটিএ। অনুমোদন পাওয়ার পর রূপপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম মোহনের ছেলে আমিরুল ইসলাম শাহীনকে বালু বিতরণের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু সেই বালু বিনা মূল্যে বিতরণ না করে রীতিমতো স্লিপ দিয়ে বিভিন্ন দরে বালু বিক্রি করে আসছেন তিনি। বিআইডব্লিউটিএ-র নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বালু বিক্রি হচ্ছে।
কাজিরহাট ঘাটের নৌপুলিশের কার্যালয়ের মাত্র কয়েক মিটারের মধ্যেই এমন কর্মযজ্ঞ চললেও নৌপুলিশের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করেও এমপির নিয়োগকৃত প্রতিনিধি আমিরুল ইসলাম শাহীনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শাহীনের ছোট ভাই পরিচয়ে সুজন নামে একজন ঘুষ প্রদান করতে আসে প্রতিবেদককে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সময় সংবাদকে বলেন, ‘গত বছর মাসের পর মাস বালুগুলো বিক্রি করা হয়েছিল, তখন আপনারা (গণমাধ্যম) কোনো খবর নেননি। কিন্তু এবার বালু বিক্রির কয়েক দিনের মধ্যেই আপনারা চলে এলেন। এরপরও আপনারা যেহেতু অভিযোগ দিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। কারণ, এখানে বিক্রির সুযোগ নেই। হয়তো লোড-আনলোডিংয়ের খরচটা দিতে হয়।’
এ ব্যাপারে পাবনার বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সবুর আলী বলেন, বিনা মূল্যে মসজিদ-মাদ্রাসায় বালু দেয়ার কথা থাকলেও তারা বিভিন্ন জায়গায় এসব বালু বিক্রি করে আসছে, এটা আমরা শুনেছি এবং সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।