শেষ ওভারে পাঁচ ছক্কা মেরে কলকাতাকে জিতিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন রিঙ্কু সিং। তার অবিস্মরণীয় কীর্তির চর্চা রীতিমত রূপকথার গল্পের মতো পেখম মেলছে ক্রিকেটের দুনিয়ায়। সাফল্যের গল্পের বিপরীতেই দীর্ঘশ্বাস ছড়ায় ব্যর্থতা। রিঙ্কুর হাতে পাঁচ ছক্কা খেয়ে দলের হারের দায় মাথায় নিয়ে গুজরাটের যশ দয়ালের চোখেমুখে খেলা করছে দুঃস্বপ্ন। তবে এমন সময়ে সান্ত্বনার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকেই। তাকে দিচ্ছে সাহস।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামটা গুজরাট টাইটান্সের হোমগ্রাউন্ড। কলকাতার বিপক্ষে সেদিনের ম্যাচে রশিদ খান হ্যাটট্রিক করে ম্যাচটা তার দলের অনুকূলেই চলে এসেছিল। শেষ ওভারে জয়ের জন্য কলকাতার লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৯ রান। শেষ ওভারে এতো রান নিয়ে জয়ের রেকর্ড নেই স্বীকৃত কোনো ক্রিকেটেই।
রিঙ্কু সিং এই ম্যাচ জিতিয়ে ফেলবেন এমন আশা ঘুণাক্ষরেও কেউ করেননি। কিন্তু যশ দয়ালের সেই ওভারে অতিমানবীয় কিছু ভর করেছিল রিঙ্কুর শরীরে। এমন চাপের মুহূর্তেই টানা পাঁচ বলে ছয়ত হাঁকিয়ে কলকাতাকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দেন। সেই পাঁচ বলে যশ কখনো ইয়োর্কার, কখনো বা স্লোয়ার দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি।
ম্যাচ শেষ হতেই হতাশায় ভেঙে পড়েছিলেন এলাহবাদে জন্ম নেওয়া এই বোলার। টেলিভিশন ক্যামেরায় তাকে দেখা যায় কাঁদতে। কান্নার সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। এমন সময়ে যশের জন্য সান্ত্বনা ও সাহসের বাণী পৌঁছে গেছে এলাহবাদ থেকে।
যশ দয়ালের পাশে দাঁড়িয়েছেন তার বাবা চন্দরপল দয়াল। সেদিনের ম্যাচে আইপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় খরুচে (০/৬৯) বোলারের রেকর্ড গড়ার পরই আত্মীয়দের বলেছেন দয়ালকে সান্ত্বনা দিতে।
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের (আহমেদাবাদে খেলা দেখতে যাওয়া দয়ালের আত্মীয়দের) বলেছি ওর সঙ্গে কথা বলে ওকে অনুপ্রেরণা দিতে। ও খুব ভেঙে পড়তে পারে। ও এমনিতেই কম কথা বলে। প্রচণ্ড অন্তর্মুখী মানুষ সে।’
শুধু অন্যের ওপর দায়িত্ব দিয়েই চুপ করে নেই চন্দরপল দয়াল। যশকে অভয় দিয়েছেন। পরামর্শ দিয়েছেন পরিশ্রম করে যাওয়ার, ‘ভয় পেয়ো না। ক্রিকেটে এমনটা নতুন নয়। বোলাররা মার খেতেই পারে। বড় বড় বোলারদের বেলাতেও এমনটা ঘটেছে। কঠিন পরিশ্রম করে যেতে হবে। বোঝার চেষ্টা করতে হবে, ভুলটা কোথায় হচ্ছে। ওকে বলেছি, আমি আসছি।’