মিয়ানমারে বিরোধী গোষ্ঠীর একটি অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৫৩ জন নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় দেশটির সাগাইং অঞ্চলে একটি গ্রাম লক্ষ্য করে এই বিমান হামলা চালানো হয়। উদ্ধারকারীরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন নারী এবং বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে।
সাগাইং-এ মিয়ানমারে সামরিক শাসনের বিরোধিতাকারী গ্রুপগুলো তাদের নিজস্ব মিলিশিয়া গঠন করেছে। সেখানে তারা নিজস্ব স্কুল ও ক্লিনিক চালাচ্ছে।
একজন গ্রামবাসী বিবিসিকে জানিয়েছেন, একটি সামরিক যুদ্ধবিমান সকাল ৭টায় উড়ে এসে একটি বোমা ফেলে। পরে একটি হেলিকপ্টার গানশিপ ২০ মিনিটের মতো গ্রামটিতে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মরদেহগুলো গণনা করার চেষ্টা চলছে। তবে মরদেহগুলো এত ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়েছে যে গণনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
গ্রামবাসীরা জানান, মিয়ানমারের বিরোধী গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) অফিসের উদ্বোধন উপলক্ষে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষজনে এলাকাটি পরিপূর্ণ ছিল। এ সময় বিমান হামলা চালানো হয়।
বিবিসি জানায়, ফেব্রুয়ারি ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী কমপক্ষে ছয়শ’টি বিমান হামলা চালিয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে কাচিন রাজ্যে একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একটি কনসার্টে মিয়ানমারের বিমানবাহিনী যুদ্ধবিমান থেকে তিনটি বোমা নিক্ষেপ করে। তাতে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হন।
মিয়ানমারে অং সান সু চি’র নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হলে সহিংস দমননীতি গ্রহণ করে জান্তা সরকার।
এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন কয়েক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী। সহিংসতার জেরে কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী একত্রিত হয়ে গঠন করে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। এরপর থেকেই জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে তারা।