কিংবদন্তি লিওনেল মেসির বেড়ে ওঠাটা স্প্যানিশ কোচ পেপ গার্দিওলার অধীনই। গার্দিওলার অধীনই ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েছিলেন মেসি। গার্দিওলার অধীনই ম্যানচেস্টার সিটিতে গোলের পর গোল করে চলেছেন নরওয়ের স্ট্রাইকার আর্লিং হলান্ড। অতীত ও বর্তমান শিষ্যের মিল ও অমিলগুলো তাই ভালোমতোই জানা গার্দিওলার।
ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেয়ার পর নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন আর্লিং হলান্ড। গোলের পর গোল করে চলেছেন। মৌসুমের এখনও অনেকটা বাকি থাকতে এরই মধ্যে বেশ কিছু রেকর্ড ভেঙেচুরে ফেলেছেন। এমনকি লিওনেল মেসির করা লিগে এক মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডকেও চোখ রাঙাচ্ছেন তিনি। তাই স্বাভাবিকভাবেই মেসির গোলক্ষুধার সঙ্গে হলান্ডের গোলক্ষুধারও তুলনা চলে আসছে।
মেসির সবচেয়ে ভয়ংকর রূপটা বের করে এনেছিলেন পেপ গার্দিওলাই। বার্সেলোনার কোচ হিসেবে মেসিকে ফলস নাইন হিসেবে খেলিয়ে দারুণ সফলতা পেয়েছিলেন তিনি। এখন গার্দিওলার অধীন একের পর এক গোল করে চলেছেন হলান্ডও। মেসি ও হলান্ডের মধ্যে মিল-অমিল তার চেয়ে ভালো আর কেইবা জানবে।
শনিবার (৮ এপ্রিল) সাউদাম্পটনের বিপক্ষে সিটির ৪-১ গোলের জয়ে জোড়া গোল করেন হলান্ড। সেই সঙ্গে লিগে পূর্ণ করেন ৩০ গোল। আর এই মৌসুমে ম্যানসিটির জার্সি গায়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৪টি গোল করেছেন তিনি।
হলান্ডের গোলক্ষুধা গার্দিওলাকে মুগ্ধ করলেও মেসির সঙ্গে তার অমিল ঠিকই খুঁজে বের করেছেন এই স্প্যানিশ কোচ। গার্দিওলা মনে করেন, হলান্ড তার পারফরম্যান্স নিয়ে সবসময়ই হাসিখুশি ও সন্তুষ্ট থাকেন। কিন্তু মেসির গোলক্ষুধা কখনোই তাকে সন্তুষ্ট হতে দেয় না। এমনকি জোড়া গোল করার পরও আরও গোল করতে উন্মুখ হয়ে থাকেন তিনি।
সাউদাম্পটনকে হারানোর পর গার্দিওলা বলেন, “হলান্ড সবসময় সুখই থাকে, সবসময় হাসে। লিওনেল মেসি দুই গোল করলে সে একটু অসুখী হয়। কারণ, সে তৃতীয়টি করতে পারেনি। আর্লিং সবসময় অবিশ্বাস্য মেজাজ ধরে রাখে। এমনকি এই মৌসুমের শুরুতে বাজে সময়েও যখন লোকজন বলাবলি করছিল, সে মানিয়ে নিতে পারবে না, সে মুখে বড় হাসি নিয়ে অনুশীলনে এলো এবং সবাইকে ‘হাই’ জানাল। সে অবিশ্বাস্য ইমপ্যাক্ট রাখছে, শুধু মাঠের ক্ষেত্রেই নয়।”
তিনি যোগ করেন, ‘প্রতিদিন অনুশীলনে, লকার রুমে, আমার মনে হয় সে আমাদের সঙ্গে সুখে আছে। সে কখনো অভিযোগ করে না (তাকে মাঠ থেকে তুলে নেয়ায়)। সে আমাকে অনেক সম্মান করে। বার্নলির বিপক্ষে ম্যাচের পর, সে চোটে পড়েছিল এবং লিভারপুলের বিপক্ষে খেলতে পারেনি, তাই আমরা তাকে জানি এবং কীভাবে তার যত্ন নিতে হবে তা-ও জানি। সে গুরুত্বপূর্ণ গোল করতে জানে এবং ম্যাচ জেতাতে পারে। সে ৯০ মিনিট করে খেলতে যাচ্ছে এবং প্রতি তিন দিন অন্তর এই পরিমাণ খেলাটা কঠিন। এবং আপনার হাতে আরও একটা অস্ত্র আছে; হুলিয়েন (আলভারেজ), যে প্রস্তুত। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা।’