পর্ন তারকাকে ঘুষ দেয়ার মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রেফতার হয়েছেন। এদিকে গ্রেফতারের পর ট্রাম্প কি আর নির্বাচনে লড়তে পারবেন, এমন প্রশ্ন সামনে এসেছে।
আন্তজার্তিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) নিউইয়র্কের ম্যানহাটন আদালতে শুনানিতে উপস্থিত হলে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
তবে এ অবস্থায় ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে দেশটির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো অভিযোগ বা ফৌজদারি অপরাধের পক্ষে রায় হলেও, ট্রাম্প যদি চান তাহলে তিনি নির্বাচনি প্রচারণা চারিয়ে যেতে পারবেন।
আর তিনি এরইমধ্যে আভাস দিয়েছেন, যাই হোক না কেন তিনি সামনে এগিয়ে যাবেন।
বাস্তবিকপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্রে এমন কোনো আইন নেই যা একজন প্রার্থী, যিনি অপরাধের জড়িত থাকার কারণে দণ্ডিত হয়েছেন তাকে নির্বাচনি প্রচারণা চালানো বা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখবে। এমনকি কারাগারে থেকেও তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
তবে ট্রাম্পের গ্রেফতার অবশ্যই তার নির্বাচনি প্রচারণাকে জটিল করে তুলবে। এর ফলে সরাসরি প্রচারণা চালানো এবং বিভিন্ন বিতর্কে হাজির হওয়ায় প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন- লাভের মধ্যে লাভ হতে পারে বিষয়টি ট্রাম্পের সমর্থকসংখ্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
এর বাইরে বিষয়টি আমেরিকান রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে আগে থেকেই বিদ্যমান তীক্ষ্ণ বিভাজনকে আরও গভীর করে তুলতে পারে।
এদিকে ট্রাম্পের গ্রেফতার ইস্যুতে বিশৃঙ্খলা এড়াতে নিউইয়র্ক জুড়ে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প গ্রেফতার হলে তার অনুসারীরা হিংসাত্মক প্রতিবাদের পথে হাঁটতে পারে বলে আশঙ্কা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। ইতোমধ্যে নিউইয়র্কের কয়েকটি রাস্তায় ট্রাম্প সমর্থকদের জমায়েত নজরে এসেছে। পাশাপাশি, ট্রাম্পের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন তার বিরোধীরাও।
কী অভিযোগ আনা হয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে
২০১৬ সালে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, ২০০৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল। এ বিষয়ে তথ্য-প্রমাণসহ একটি অ্যাকাউন্ট বিক্রি করার কথাও জানান স্টর্মি। পরে বিষয়টি ডোনাল্ড ট্রাম্পের লোকজনের কানে গেলে ট্রাম্পের হয়ে তার আইনজীবী মাইকেল কোহেন স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে চুপ থাকার জন্য এক লাখ ৩০ হাজার ডলার দেন।
এই টাকা দেয়া অবৈধ কোনো বিষয় ছিল না। কিন্তু গোল বাধে তখন, যখন ট্রাম্প মাইকেল কোহেনকে সেই ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ফেরত দেন। আইনি প্রক্রিয়ায় এই অর্থ লেনদেনকে ট্রাম্পের তরফ থেকে কোহেনকে দেয়া ফি হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়। অথচ বিষয়টি তা নয়। কৌঁসুলিদের অভিযোগ, ট্রাম্প এই অর্থ দিতে গিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন, যা একটি ফৌজদারি অপরাধ।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হতে পারে যে, ট্রাম্প নির্বাচনি আইন ভঙ্গ করেছেন। কারণ, স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে ট্রাম্পের অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি ট্রাম্প জনগণকে জানতে দিতে চান না এবং তাই তা অর্থ দিয়ে ঢেকে রাখতে চান।