যে পানিতে নামলেই হয় চর্মরোগ। সেই বিষাক্ত কেমিক্যাল আর আবর্জনায় ভরা বুড়িগঙ্গার দূষিত পানিতেই ধোয়া হচ্ছে হাসপাতালের বিছানার চাদর থেকে এপ্রোন। ফেলে রাখা হয় যত্রযত্রভাবে। তবে পানিকে দূষিত বলতে নারাজ অনেক ধোপা।
এতে চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানান চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুল করিম।
প্রতিদিনের সকাল ৮টা। দূষণের দুর্গন্ধ, কেমিক্যালে বিষাক্ত কুচকুচে কালো বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে ধোয়া হচ্ছে হাসপাতালের বিছানার চাদর, বালিশের কাভার থেকে শুরু করে আইসিইউ ও অপারেশন থিয়েটারের এপ্রোন। বাদ যায়নি লন্ড্রিতে দেয়া প্রতিদিনের ব্যবহার্য কাপড়-চোপড়ও। সাবান-সোডার কার্যকারিতায় কাপড়ের ময়লা কিছুটা পরিষ্কার হলেও জীবাণুমুক্ত হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো কেমিক্যালের বিষাক্ত জীবাণু কাপড়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হচ্ছে মানবদেহে।
সময় সংবাদের উপস্থিতি টের পেয়ে বন্ধ হয়ে যায় কাপড় ধোয়া। মুহূর্তেই পালিয়ে যান কয়েকজন ধোপাও। শুকাতে দেয়া হাসাপাতালের বিভিন্ন কাপড় চোখের পলকেই সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন অনেক ধোপারা। দূষিত পানিতে হাসপাতালের কাপড় ধোয়ার কথা স্বীকার করে কথা বললেও রাজি নন ক্যামেরায় মুখ দেখাতে।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বুড়িগঙ্গা নদীতে ধুয়ে নদীর তীরের নোংরা পরিবেশে ময়লায় দীর্ঘ সময় ধরে এসব স্পর্শকাতর কাপড় ফেলে রাখা হয়। স্থানীয়রা জানান, যে পানিতে নামলেই হয় চুলকানি সেখানেই প্রতিদিন ধোয়া হয় হাসপাতালের হাজার হাজার কাপড়।
বুড়িগঙ্গার পানি যে দূষিত তা মানতে নারাজ অনেক ধোপা। পানির বিশুদ্ধতা প্রমাণ করতে কজন ধোপা এ বিষাক্ত পানি দিয়ে কুলি করেও দেখান। একধাপ এগিয়ে পানও করলেন কেউ কেউ।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুল করিম সময় সংবাদকে সম্প্রতি জানান, দূষিত ও বিষাক্ত পানিতে হাসপাতালের এসব স্পর্শকাতর কাপড় ধোয়ার ফলে ভয়াবহ চর্মরোগে আক্রান্ত হতে পারেন চিকিৎসা নিতে আসা মানুষ।
আর প্রতিটি হাসপাতালে ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপন করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হাসপাতালের কাপড় ধোয়ার পরামর্শ এ বিশেষজ্ঞর।