সেলিম দুরানি। ষাটের দশকে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেটারে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। সমর্থকদের দাবি মেনে নাকি ৬-৭ বার ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন এ ক্রিকেটার। রোববার (২ এপ্রিল) মারা গেছেন তিনি।
গুজরাটে জামনগরের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন দুরানি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। বহুদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। গত জানুয়ারিতে উরুর হাড় ভেঙে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। তখন তার অস্ত্রোপচারও করাতে হয় তার।
দুরানির জন্ম আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে। তিনি ১৯৩৪ সালের ১১ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তবে বেড়ে উঠেছিলেন মূলত গুজরাটে। এখানেই তার ক্রিকেটে হাতেখড়ি। ১৯৬০ সালে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। জাতীয় দলের হয়ে ১৯৭৩ পর্যন্ত খেলেন তিনি।
১৯৬১-৬২ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে অবদান ছিল বাঁহাতি এ স্পিনারের। শেষ ২ টেস্টে তিনি নিয়েছিলেন ১৮ উইকেট। ১৯৭১ সালে পোর্ট অফ স্পেনে ভারতের জয়েও রেখেছিলেন দারুণ অবদান। আউট করেছিলেন ক্লাইভ লয়েড ও গ্যারি সোবার্সকে। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ভর করে পরের বছর মধ্যাঞ্চল দলীপ ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। পশ্চিমাঞ্চলের বিরুদ্ধে ফাইনালে বল হাতে তিনি নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। আর ব্যাট হাতে রান তাড়া করার সময়ে নেতৃত্ব দিয়ে অপরাজিত থেকেছিলেন ৮৩ রানে। যার ফলে তখন রব উঠেছিল, এটা দলীপ ট্রফি, নাকি দুরানি ট্রফি!
টেস্ট দলে একবার দুরানিকে বাদ দেওয়ায় স্লোগান উঠেছিল। সমর্থকরা বলেছিলেন, ‘নো দুরানি, নো টেস্ট’। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরের টেস্টে তাকে দলে ডাকতে বাধ্য হয়েছিলেন নির্বাচকরা। দুরানিই প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে পেয়েছিলেন অর্জুন সম্মান।
২৯ টেস্টে এক সেঞ্চুরিসহ ১ হাজার ২০২ রান আর ৭৫ উইকেটের মালিক দুরানি। অবশ্য অনেকে বলে থাকেন, পরিসংখ্যানে তাকে মাপা শুধু কঠিনই নয়, আদতে অসম্ভবই। ক্রিকেট-চেতনায় প্রভাব ফেলার ব্যাপারটাই যে পরিসংখ্যানে অনুপস্থিত!