সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনী `উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড’ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। সেই সঙ্গে তাদের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাসের বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ খবর দিয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, শুক্রবার (৩১ মার্চ) রুশ বাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তা ওলেগ গুরিনভ বলেছেন, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হাসাকাহ প্রদেশে সম্প্রতি একাধিক ‘উস্কানিমূলক’ ঘটনা ঘটেছে। যেখানে কয়েক বছর ধরে মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। স্থানীয় কুর্দি বাহিনীর সঙ্গে মিলে তারা জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বলে দাবি করে আসছে।
২০১৫ সাল থেকে সিরিয়ায় রুশ বাহিনীও মোতায়েন রয়েছে। রুশ নৌবাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল ওলেগ গুরিনভ রাশিয়ান সেন্টার ফর রিকনসিলিয়েশন অব দ্য অপোজিং পার্টিস ইন সিরিয়ার প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
সংবাদ সংস্থা তাসকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, হাসাকাহ প্রদেশে মার্কিন বাহিনীর দিক থেকে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা গেছে। এসব কর্মকাণ্ডের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’
গুরিনভ বলেছেন, হাসাকাহ প্রদেশের যেসব এলাকায় মার্কিন সেনাদের অভিযান সীমাবদ্ধ রাখার কথা না, সম্প্রতি সেসব এলাকার বাইরেও অন্তত দুইবার তাদেরকে টহল দেখা গেছে। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি রুশ ও তুর্কি বাহিনীর যৌথ টহলকালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন তথাকথিত সন্ত্রাস-বিরোধী জোটের সেনাদের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
২০১১ সালে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মধ্যদিয়ে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এক পর্যায়ে এই যুদ্ধে যুক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী। এরপর ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পক্ষে ময়দানে নামে রাশিয়া। বর্তমানে সিরিয়ায় রুশ ও মার্কিন উভয় বাহিনীর একাধিক সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।
সম্প্রতি (২৩ মার্চ) সিরিয়ায় ইরানপন্থি গোষ্ঠীর ওপর বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার জবাবে দেশটির পূর্বাঞ্চলে একাধিক বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে জানায় মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা। এ হামলায় গোষ্ঠীটির ১১ সদস্য নিহত হয়।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন আরও বলে, ২৩ মার্চ দুপুর প্রায় ১টা ৩৮ মিনিটে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় হাসাকা শহরের কাছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর একটি ঘাঁটিতে একটি ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় এক মার্কিন সামরিক ঠিকাদার নিহত ও আরও একজন আহত হন। এছাড়া আহত হন আরও পাঁচ সেনা।
মার্কিন বিমান হামলার পর এর জবাব দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে সিরিয়ার ইরানপন্থি মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো। বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ফের বিমান হামলা চালালে তার জবাব দেয়া হবে। এর জন্য যথেষ্ট সক্ষমতা তাদের রয়েছে।