ফ্রান্সে সরকারি চাকরিজীবীদের বয়স বৃদ্ধির প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) টানা ১০ম দিনের বিক্ষোভে রাজধানী প্যারিসসহ সবগুলো বড় শহরে রাস্তায় নামে লাখ লাখ মানুষ। এসব বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হলেও বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় অন্তত ২৭ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ফ্রান্সে সরকারি কর্মচারীদের অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এর বিরুদ্ধেই চলতি বছরের শুরু থেকে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বিক্ষোভ জোরদার হয়ে উঠছে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের মাত্রাও বাড়িয়ে চলেছে পুলিশ।
সিএনএনের প্রতিবেদন মতে, মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ফ্রান্সজুড়ে ২৪০টি বিক্ষোভ মিছিল হয়। এসব মিছিলে অন্তত ৭ লাখ ৪০ হাজার বিক্ষোভকারী অংশ নেন। এর মধ্যে রাজধানী প্যারিসেই অংশ নেন ৯৩ হাজারের বেশি মানুষ।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন মতে, এদিন সকালেই রাজধানী প্যারিসসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শহরে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়। প্যারিসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পেনশন আইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। তবে কোনো রকমের উসকানি ছাড়াই বিক্ষোভ মিছিলে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। ফলে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে।
সংবাদমাধ্যমে সংঘর্ষের বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, রাজধানী প্যারিসে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ছুড়ছে। সেই সঙ্গে চলছে লাঠিচার্জও। জবাবে পুলিশকে লক্ষ্য করে আতশবাজি ছুড়ছে বিক্ষোভকারীরা। ফ্রান্সের পশ্চিমের শহর নান্তেসেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের টিয়ার গ্যাসের জবাবে ইট-পাটকেল ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে গত সপ্তাহে (২৩ মার্চ) ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ম্যাক্রোঁ সরকারের প্রস্তাবিত অবসর নীতিমালার বিরুদ্ধে তিন মাস ধরে চলমান বিক্ষোভে সেটাই সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা বলে জানায় গণমাধ্যমগুলো।
সংঘর্ষে ৪৪১ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আহত হন। ওইদিন বিক্ষোভ করায় ৪৫৭ জন গ্রেফতার করা হয়। প্যারিসের রাস্তায় ৯০৩ স্থানে বিক্ষোভকারীরা আগুন দেন।
গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সরকারি কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার পরিকল্পনা হয় এবং পার্লামেন্টে কোনো ধরনের ভোটাভুটি ছাড়াই এ সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়।