ফ্রান্সজুড়ে চলছে বিক্ষোভ ও ধর্মঘট। সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বয়স ও পেনশন বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কয়েক সপ্তাহ ধরেই রাস্তায় ফরাসিরা। কিন্তু সিদ্ধান্তে অনড় প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
এরই মধ্যে ঘড়ি বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। আর সেই বিতর্কের সূত্র ধরেই আবারও ‘ধনীদের প্রেসিডেন্ট’ আখ্যা পেয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
ফ্রান্সে এখন অবসরের বয়স ৬২ বছর। এটা ৬৪ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ম্যাক্রোঁর সরকার। ম্যাক্রোঁ বলছেন, পেনশন সংস্কার জরুরি এবং দেশের স্বার্থেই তা করা হচ্ছে। কিন্তু ফরাসিদের একাংশ বলছে, ম্যাক্রোঁর এই পদক্ষেপে ধনীরাই লাভবান হবে। আর তাই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে জনতা।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে তারা সপ্তাহান্তে বিক্ষোভ হচ্ছে। এখন নয় দফায় বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন মতে, গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ফ্রান্সজুড়ে ১০ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছে।
পরদিন বুধবার (২২ মার্চ) পেনশন সংস্কার নিয়ে আলোচনার জন্য টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হন ম্যাক্রোঁ। এ সময় তার হাতে একটি দামি ঘড়ি ছিল।
প্রতিবেদন মতে, আলোচনার এক পর্যায়ে হাত আড়াল করে নিজের ঘড়িটি খুলে রাখেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ওই ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় সমালোচনা ও বিতর্ক। ফরাসি জনগণ তাকে আরও একবার ‘ধনীদের প্রেসিডেন্ট’ বলে অভিহিত করেন।
তবে ফরাসি প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে ঘড়ি বিতর্কের সাফাই দিয়ে বলা হয়েছে, ঘড়িটি দামি বলে নয়, টেবিলের সঙ্গে লেগে শব্দ করায় প্রেসিডেন্ট সেটা খুলে ফেলেছিলেন।
এলিসি প্রাসাদের বক্তব্য, ‘প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ আড়াল করার জন্য তার ঘড়ি খোলেননি। সেটি টেবিলের উপর লেগে শব্দ হচ্ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওর শুরুতেও সেই শব্দ স্পষ্টভাবে শোনাও যাচ্ছে।’
ঘড়িটির সঠিক মূল্য জানা যায়নি। ফরাসি সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, ঘড়িটি ফরাসি কোম্পানি বেল অ্যান্ড রস ‘র তৈরি। দাম ১৬ হাজার থেকে ২৪ হাজার ইউরোর মধ্যে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ কোটি ৮১ লাখ টাকার সমান।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমাগুলো লিখেছে, দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ঘড়িটি হাতে পরছেন ম্যাক্রোঁ। তার ইনস্টগ্রাম অ্যাকাউন্ট ও অফিসিয়াল ছবিতে সেটি রয়েছে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপের সময় এবং গত ডিসেম্বরে ওয়াশিংটন সফরেও তিনি এই ঘড়ি পরেন।