বিদ্যমান সংকট থেকে দেশকে বের করে আনতে পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের কোনো রোডম্যাপ নেই বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নিজের পক্ষ থেকে ১০ দফা পরিকল্পনা পেশ করেছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শনিবার (২৫ মার্চ) লাহোরে মিনার-ই-পাকিস্তানে সমবেত বিশাল জমায়েতের সামনে ভাষণ দিতে গিয়ে ইমরান খান তার ১০ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
১০ দফা প্রস্তাব উত্থাপনের আগে ইমরান খান দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে তাকে এবং তার দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
দেশকে বিদ্যমান সংকট থেকে উদ্ধারে সরকারের কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না, প্রশ্ন রাখেন ইমরান খান। পরে তিনি আবার বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, বিদ্যমান সংকট থেকে দেশকে উদ্ধারের সক্ষমতা কিংবা সদিচ্ছা কোনোটাই বর্তমান সরকারের নেই।’
ইমরান খান আরও বলেন, ‘যদি ইস্টাবলিশমেন্ট আমাকে বলে যে, তাদের নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা রয়েছে; তবে আমি স্বেচ্ছায় তাদের পথ থেকে সরে দাঁড়াব। কিন্তু আমি জানি, তাদের পরিকল্পনা কী…তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সংকটের কোনো সহজ সমাধান নেই। এই সংকট কেবল এমন একটি সরকারই সমাধান করতে পারে, যাদের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জনগণের রায় রয়েছে।’
ইমরান খানের ১০ দফা প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা। আইএমএফ বা কোনো ধরনের ঋণ সহায়তার পরিবর্তে প্রবাসী পাকিস্তানিদের কাছ থেকে দেশে সরাসরি বিনিয়োগ বাড়ানো। পাশাপাশি রফতানিমুখী খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে উৎপাদন বাড়ানোর কথাও বলেছেন ইমরান খান।
ইমরান খান পাকিস্তানের পর্যটন খাতকে চাঙা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গৃহীত হবে বলেও জানান। এ ছাড়া দেশের খনিজ সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আনা হবে। এর বাইরে দেশের মাঝারি এবং ক্ষুদ্রশিল্প খাতকেও চাঙা করা হবে। পাশাপাশি রাজস্ব বাড়াতে বিভিন্ন কর বাড়ানোর কথাও বলেন ইমরান খান।
পাকিস্তানের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী তার সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের আবাসন খাত এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতকেও এগিয়ে নেয়ার রূপরেখা প্রণয়ন করেন। তিনি আরও জানান, তার সরকার ক্ষমতায় গেলে চীনের সহায়তা নিয়ে দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়াবে। এ ছাড়া মানি লন্ডারিং বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।