সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সীমান্ত নদী ইছামতি পাড়ের সুশীলগাতি, কোমরপুর ও নাংলা সীমান্তে বেড়িবাঁধ ভেঙে আশপাশের এলাকার বহু পরিবারের বাড়িঘর এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে। প্রতিবারই বেড়িবাঁধ ভাঙে। সেই সঙ্গে ভাঙে প্লাবিত অঞ্চলের মানুষের কপাল। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি গবাদিপশু-পাখির ক্ষতির পাশাপাশি প্রচুর লোকসানে পড়েন ফসলি জমি ও মৎস্য ঘেরের মালিকরা।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্ত নদী ইছামতির প্রবল জোয়ারের তোড়ে প্রায় ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেবহাটা উপজেলার ভাতশালা এলাকায় বেড়িবাঁধেও ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় ক্ষণ গুনছেন ভাঙনকবলিত এলাকার অধিবাসীরা।
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন বকুল জানিয়েছেন, ভাতশালা এলাকায় ইছামতি নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধের বেশির ভাগ নদীতে বিলীন হয়েছে। বাঁধ ভাঙনের ভয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
বেড়িবাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, বারবার তাগিদ দিয়েও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো সাড়া মেলে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শ মতে রিং বাঁধ না করে বাড়িঘর ফসলি জমি ও মৎস্য ঘের বাঁচাতে ভেঙে যাওয়া বাঁধ টেকসই করে বাধার দাবি এলাকাবাসীর। ত্রাণ নয়, টেকসই বাঁধ চায় নদীকূলের মানুষজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ তালুকদার টেকসই বেড়িবাঁধের বিকল্প নেই উল্লেখ করে জানিয়েছেন, শিগগিরই বালুর জিও ব্যাগ ও ব্লক ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করে আপাতত ভাঙন প্রতিরোধ করা হবে। পরবর্তীতে বরাদ্দ নিয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভারতীয় পাড়ে ইটের ভাটার ভ্যাস ও আধলা ইট ফেলে নদীর পাড় মজবুত করায় স্রোতের গতিপথ বাংলাদেশ পাড়ে আঘাত হানায় বারবার এপারে বেড়িবাঁধ ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। এরই মধ্যে ১৫০টিরও বেশি পরিবারের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হওয়ায় অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।