ভারতীয় ক্রিকেটে বিরেন্দর শেবাগ আলাদা একটা জায়গা পাবেন তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য। কী টেস্ট, কি ওয়ানডে, নিজের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ওপেনিংয়ে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন ভারতের ক্রিকেটে। সেই শেবাগ খেলা ছেড়েছেন অনেকদিন হলো। তবে সুযোগ এসেছিল নিজের ক্রিকেট দর্শন ভারতীয় দলে ছড়িয়ে দেওয়ার। সে সুযোগ অবশ্য স্বেচ্ছায় হাতছাড়া করেছেন তিনি।
বিরাট কোহলি যখন ভারতের অধিনায়ক, কোচের দায়িত্বে তখনও ছিলেন সাবেক লেগ স্পিনার অনিল কুম্বলে। তবে এই কিংবদন্তির সঙ্গে কোহলির সম্পর্ক যে ভালো চলছিল না, এমন খবর প্রায়ই এসেছে গণমাধ্যমে। সে সময়ই ভারতের কোচ হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন শেবাগ। খোদ অধিনায়ক কোহলিই কোচ হওয়ার প্রস্তাব সেধেছিলেন নজফগড়ের নওয়াবকে। তার কথামতো নাকি আবেদনও করেছিলেন কোচের পদে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সসম্মানে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সে প্রস্তাব। নিউজ১৮ কে এমনটা নিজেই জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি।
অনিল কুম্বলের কোচের চাকরি যাওয়াটা যখন প্রায় পাকা সে সময় কোহলি শেবাগকে কোচ হওয়ার আবেদন করতে অনুরোধ করেন। তৎকালীন বোর্ড সচিব অমিতাভ চৌধুরীও শেবাগের কাছে একই অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এই কিংবদন্তি বলেন, ‘বিরাট কোহলি এবং বিসিসিআইয়ের তৎকালীন সচিব অমিতাভ চৌধুরী আমাকে অনুরোধ না করলে আমি আবেদন করতামই না। আমাদের একটা সাক্ষাৎ হয় এবং সে (চৌধুরী) আমাকে বলে, কোহলি ও কুম্বলের মধ্যে কোনোকিছু ঠিকঠাক চলছে না। আমরা চাই তুমি কোচের দায়িত্বটা নাও।’
তিনি যোগ করেন, ‘তারা আমকে বলে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর কুম্বলের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং তখন তুমি দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যেতে পারবে।’
তবে শেষ পর্যন্ত শেওয়াগ আর ভারতীয় দলের কোচ হননি। দলের সঙ্গে ক্যারিবিয়ান সফরে যাওয়াও হয়নি। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি হ্যাঁ বা না কিছুই বলিনি। তবে এটা জানিয়েছিলাম, ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে গেলে নিজের কোচিং স্টাফ, সহকারী কোচ, বোলিং, ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং কোচকে সঙ্গে নিয়েই যাব। সাপোর্ট স্টাফ বেছে নেওয়ার ব্যাপারে আমার পছন্দই শেষ কথা। ওরা সেটাতে রাজি হয়নি। তাই দলের সঙ্গেও যাইনি এবং কোচের পদও গ্রহণ করিনি।’
তবে ভারতের কোচ হতে না পারায় তার কোনো আফসোস নেই, যেমন আফসোস নেই ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়ার সৌভাগ্য না হওয়ায়। তিনি বলেন, ‘একদমই নয়। আমি যা অর্জন করেছি তা নিয়েই সুখী।’
শেবাগ যোগ করেন, ‘নজফগড়ের ছোট্ট একটা কৃষক পরিবার থেকে উঠে এসে আমি ভারতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। সমর্থকদের কাছ থেকে অপরিমেয় ভালোবাসা ও প্রশংসা পেয়েছি এমনকি ভারত দলের অধিনায়ক হলেও একই পরিমাণ সম্মান পেতাম আমি।’