আফগানিস্তানে চাকরি থেকে স্বজনদের বাদ দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির তালেবান সরকার। পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য আফগান ইসলামিক প্রেস জানায় রোববার (১৯ মার্চ) এক ডিক্রিতে এ ঘোষণা দেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। এ ছাড়া ভবিষ্যতেও এসব পদে স্বজনদের নিয়োগের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি।
২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের পর আফগানিস্তানের বেশকিছু সরকারি জ্যেষ্ঠ আমলাকে বরখাস্ত করা হয়। পালিয়ে যান আরও অনেকে। পরে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ কর্মচারীদের নিয়োগ দেয়া হয় বলে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। যাদের বেশিরভাগই ছিলেন অদক্ষ।
তবে এবার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছেলে ও অন্য স্বজনদের বাদ দিয়ে তাদের স্থলে নতুনদের নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দিলেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতেও এসব পদে স্বজনদের নিয়োগের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি। শনিবার এক ডিক্রিতে এ ঘোষণা দেন তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।
ক্ষমতা গ্রহণের পর বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ তালেবান কর্মকর্তা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে তাদের সন্তানদের নিয়োগ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা এ ডিক্রি জারি করলেন। ডিক্রিতে সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকারি পদ থেকে ছেলে বা পরিবারের অন্য সদস্যদের অনতিবিলম্বে বরখাস্ত করতে হবে এবং ভবিষ্যতে আত্মীয়স্বজনদের নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। রোববার তালেবানের প্রশাসনিক কার্যালয়ের টুইটার পেজে ডিক্রিটির একটি ছবিও পোস্ট করা হয়।
তালেবানের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের পর থেকেই গভীর অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটের মুখোমুখি আফগানিস্তান। তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমারা। বন্ধ করে দেয়া হয় অনুদান। স্থগিত করা হয় বেশিরভাগ বিদেশি তহবিল। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক সম্পদ জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এ ছাড়া নারী অধিকার ক্ষুণ্ন করে তালেবান সরকারের নেয়া বৈষম্যমূলক নানা সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী একঘরে হয়ে পড়ে আফগানিস্তান। এতে আরও হুমকির মুখে পড়ে দেশটির অর্থনীতি। তবে এতকিছুর পরও চাকরি থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের ছেলে ও স্বজনদের বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।