গাড়ির শোরুমে হামলা ভাঙচুরের বিচার না হয়ে উল্টো মাহিকেই পাঠানো হয়েছে কারাগারে। পুলিশ তাকে রিমান্ডেও নিতে চেয়েছিলেন। দেশে ফিরেই এমন দমবন্ধ অবস্থায় মামলায় গ্রেফতার হওয়ার ৬ ঘণ্টা পর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জামিন পান ঢাকাই সিনেমার এ নায়িকা।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় মামলা ও কারাগার ভোগ করায় এই মুহূর্তে মাহি ভীত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশ, আদালতের কার্যক্রম নিয়ে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার হওয়া চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশের সময় আদালতের বিচারক কোনো কথাই শোনেননি বলে অভিযোগ করেছেন এই অভিনেত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, এক সেকেন্ডের মধ্যে আদালতের কার্যক্রম কীভাবে শেষ হয়ে যায়?
জামিন পাওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন মাহি। ঘটনার শুরু শুক্রবার (১৭ মার্চ) ভোরে ফেসবুক লাইভ ও একটি ভিডিও শেয়ারের মাধ্যমে।
ওই ভিডিওতে মাহি জানান, গাজীপুরে তাদের গাড়ির শোরুম দখল করতে গভীর রাতে ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ভাঙচুরের পেছনে মাহির স্বামী রাকিব সরকার দায়ী করেন ইসমাইল হোসেন লাদেন ও মামুন সরকার নামে দুজনকে।
ফেসবুকে লাইভে মাহি দাবি করেন, গাজীপুরের দুই পুলিশ কর্মকর্তা দেড় কোটি টাকা ঘুষ খেয়ে মাহির স্বামীর শোরুম দখল করার চেষ্টা করে। অথচ তাদের বিষয়ে কোনো তদন্তের তাড়া নেই পুলিশ কর্তৃপক্ষের? মাহির আরও প্রশ্ন, গাড়ির শোরুম বাঁচাতে থানায় জিডি করতে গেলে তাকে ডিসির পারমিশন কেন আনতে হবে? অনেক নাটকের পর ফেক জিডি কেন তাদের দেয়া হলো, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ঢাকাই সিনেমার অগ্নিকন্যা খ্যাত এ অভিনেত্রী।
নয় মাসের অন্তঃসত্তা মাহিকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিতে চেয়েছিল গাজীপুর পুলিশ। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মাহি বলেন, ‘আমি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ডিজিটাল আইনের মামলায় আমাকে রিমান্ডে নিয়ে কী করবে তারা।’
একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী হিসেবে সামান্য মানবিকতা তিনি পাননি। বরং হয়েছেন নির্যাতনের শিকার। মাহি বলেন, ‘আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। পুরো পুলিশ প্রশাসন নয়, গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি।’
এ অন্যায়ের সমাধান আইনিভাবেই করতে চান মাহি। তিনি মনে করেন, যে দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; সে দেশে একজন পুলিশ কমিশনার অন্যায় করে পার পাবে না।
পুরো ঘটনাতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মাহি ও শিল্পী সমিতির সদস্যরা। জামিনে চিত্রনায়িকা মাহি এখন কারাবাসে না থাকলেও এ ঘটনার শেষ কী হবে, তা শুধু সময়ই বলতে পারবে।