রাজবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী চন্দনা নদীতে এক সময় ৫০০ থেকে হাজার মণ মালামাল বোঝাই করে বড় বড় নৌকা যাতায়াত করতো। এখন সে দৃশ্য আর নেই। নদীর দুপাশে দখল করে গড়ে উঠেছে ছোট বড় বিভিন্ন রকম স্থাপনা ও বসতঘর। কোনো স্থানে আবার নদীর মধ্যে ও দুপাশ দখল করে চলছে ফসলের চাষাবাদ। ফলে দখল আর দূষণে রাজবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী চন্দনা নদী ক্রমেই ভরাট হয়ে আসছে।
রাজবাড়ী জেলার পদ্মা নদীর পরেই ছিল চন্দনা নদীর অবস্থান। চন্দনার মূল উৎস পদ্মা নদী। রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা থেকে বের হয়ে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি, ফরিদপুরের মধুখালী, বোয়ালমারী ও ফরিদপুর সদর উপজেলা পার হয়ে তা আবার অন্য নামে পদ্মা নদীতেই মিশেছে। চন্দনা নদীর কারণেই রাজবাড়ীর পাংশা, কালুখালী ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় গড়ে ওঠে উপ শহর। আর এই উপ শহরকে কেন্দ্র করে ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য জেলার রতনদিয়া, সোনাপুর, রামদিয়া, বহরপুর,বালিয়াকান্দি ও জামালপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠে হাট বাজার। কালের বিবর্তনে চন্দনা নদী হয়ে গেছে গোচারণ ভূমি। প্রভাবশালীদের দখলে আর দূষণে নদী শুকিয়ে ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে আসছে।
এলাকাবাসীরা বলেন, আমরা দেখেছি এই চন্দনা নদী দিয়ে এক সময় মালামাল বোঝাই করে বড় বড় নৌকা গুন টেনে আবার কখনো পাল উড়িয়ে যেত। এখন আর সে দৃশ্য নেই। নদীর দুপাশ দখল করে স্থাপনা ও বসতবাড়ি তুলেছে প্রভাবশালীরা। নদীর মধ্যে ফসল চাষ হচ্ছে। এ সব কারণে প্রতিদিনের ময়লা আবর্জনায় ক্রমেই নদী ভরে আসছে। আবার অনেক যায়গাতে নদী শুকিয়ে গেছে। চন্দনা নদীর মত আমাদেরও জীবন প্রবাহ থেমে গেছে। তাই চন্দনা নদী পুনঃখনন করার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা জোর দাবি জানাই।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, সরেজমিন দেখেছি। চন্দনা নদীতে যেনো পুনরায় পানি প্রবাহ ও নৌযান চলাচল করতে পারে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। আর যে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা আছে তা উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে।