দেশের প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেটি করার; এরই মধ্যে চারটি করেও দিয়েছি।
বুধবার (১৫ মার্চ) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালের নার্সিং কলেজের দ্বিতীয় স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে কোনো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রতিটি বিভাগেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব। এরই মধ্যে চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেয়া হয়েছে। আমরা বেসরকারি খাতকেও উৎসাহিত করছি। তারাও মেডিকেল কলেজ করছে।
তিনি বলেন, আমরা নার্সিং ট্রেনিংকেও গুরুত্ব দিচ্ছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নার্সিংয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমাদের দেশে জনসংখ্যা বেশি। আমাদের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক ও মাতৃসেবা কেন্দ্র রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে রোগীদের সেবা দিতে আমাদেরও পর্যাপ্তসংখ্যক মানসম্পন্ন নার্স দরকার। মানুষের সেবা করার দিকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমরা ২৩টি নার্স ইনস্টিটিউটকে কলেজে উন্নীত করেছি। আরও ১৬টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা প্রতি জেলায় মেডিকেল কলেজ করে দিচ্ছি। পাশাপাশি নার্সিং ট্রেনিংয়েরও ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ৪০ হাজারের মতো নার্স নিয়োগ দেয়া হয়ে। বয়স ছিল না, তবে অভিজ্ঞ হিসেবে আমরা ১৫ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। যাতে তারা সেবাটা দিতে পারেন এবং সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও করেছি।
যুব সম্প্রদায় নার্সিং পেশায় যুক্ত হয়ে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। শুধু দেশে নয়, কর্মসংস্থানে বিদেশেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এ পেশার বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
এখন তো ডক্টরেটও করা যায় নার্সিংয়ে–এ কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের বাইরে থাইল্যান্ড ও ভারতে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে নার্সদের; যাতে তারা আরও সক্ষম হয়ে উঠতে পারেন এ কাজে।
দেশের সব বিভাগেই একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে; সে ক্ষেত্রে দেশেও প্রচুর নার্স প্রয়োজন হবে। এ জন্য ১০ হাজার নার্স ও ৫ হাজার মিডওয়াইফের পদ সৃষ্টির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর এ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট, হাসপাতাল সফটওয়্যার ও কেপিজে ঢাকা জার্নাল অব মেডিকেল সায়েন্সের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজের সিইও মো. তৌফিক বিন ইসমাইল।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া কেপিজে হেলথকেয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ইমেরিটাস দাতো ডা. লোকমান সাইম।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে হাসপাতাল এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা।