পরিবেশবাদীদের ঘোর বিরোধিতা উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৃহত্তম তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন প্রকল্প অনুমোদন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এর ফলে সৃষ্টি হবে বিনিয়োগের সুযোগ, তৈরি হবে কর্মসংস্থান। তবে পরিবেশবাদীদের দাবি, প্রকল্পের কাজ শুরু হলে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে অঞ্চলটির জলবায়ু এবং বণ্যপ্রাণীদের ওপর।
সম্প্রতি পরিবেশকর্মীদের অনেক তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৃহত্তম তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন প্রকল্প। বিশেষ করে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় টিকটকে তরুণ পরিবেশকর্মীরা এর ঘোর বিরোধিতা করেছেন। এবার সেই বিরোধিতার মধ্যেই প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সোমবার (১৩ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে উদ্যোগী কনোকোফিলিপস কোম্পানি জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ৭০০ কোটি ডলারের প্রকল্পের ফলে স্থানীয় পর্যায়ে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি তৈরি হবে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান।
আলাস্কার প্রত্যন্ত নর্থ স্লোপ এলাকায় উইলো প্রকল্পটি চালুর পরিকল্পনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, উত্তোলন শুরু হলে একদিনেই সেখান থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল তেল পাওয়া যাবে। কিন্তু পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা, প্রকল্পের কাজ শুরু হলে সেখানকার জলবায়ু এবং বণ্যপ্রাণীদের ওপর এর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।
এছাড়া জো বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারও বিপরীতে যায় তেল-গ্যাস উত্তোলনের এই প্রকল্প। কারণ, তেল-গ্যাস উত্তেলন প্রকল্পের ফলে কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা বছরে ৯২ লাখ মেট্রিকটন বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
পরিবেশকর্মীরা বলছেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব মানবজাতির জন্য হুমকি। বাইডেন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছে তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে। তারা প্রতিশ্রুতি কেবল ভাঙছেই না, আইনের লঙ্ঘনও করছে। আমরা আদালতে যাচ্ছি, প্রশাসনকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন বলছে, উইলো প্রজেক্টের প্রতিবাদ জানিয়ে ১০ লাখেরও বেশি চিঠি এসেছে হোয়াইট হাউসে। আর এ প্রকল্প বন্ধের ডাক দিয়ে অনলাইনে করা আবেদনে তিন লাখেরও বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন।
তবে আলাস্কা থেকে কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্ব করা তিন আইনপ্রণেতাই উইলো প্রজেক্ট অনুমোদনের জন্য চাপ দিয়েছেন। ওই অঞ্চলে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এই প্রকল্প খুবই দরকার বলে জানিয়েছেন তারা। আইনপ্রণেতারা আরও বলেন, প্রকল্পটি দেশের জ্বালানি উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করার পাশাপাশি বিদেশের তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরশীলতা কমাবে।