বরগুনার তালতলীতে স্কুলছাত্রীর ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় মায়ের আত্মহত্যায় প্রধান অভিযুক্ত আসাদুলকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাব। রোববার (১২ মার্চ) রাত ১০টার দিকে বরগুনার তালতলী থানায় আসাদুলকে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে রোববার ভোরে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা থেকে আসাদুলকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে সেখান থেকে র্যাব-৮ এর পটুয়াখালী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে এ ঘটনায় শনিবার (১১ মার্চ) রাতে আসাদুলকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আত্মহত্যার প্ররোচনা, ধর্ষণ, পর্নোগ্রাফি, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা।
এ বিষয়ে মামলার বাদী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি আসাদুলের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছি। ওর কারণে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। আমার মেয়েটা লোকলজ্জায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ওর কারণে আমার সাজানো সংসার তছনছ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে র্যাব-৮ এর পটুয়াখালী ক্যাম্প কমান্ডার তুহিন রেজা বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আসাদুলকে আমরা গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে তালতলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আসাদুলকে আগামীকাল আদালতে হাজির করা হবে।
এর আগে ওই স্কুলছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে গত ৯ মার্চ লোকলজ্জার ভয়ে তার মা অ্যাসিড পান করে আত্মহত্যা করেন।
বরগুনার তালতলীতে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে লোকলজ্জার ভয়ে তার মা অ্যাসিড পান করেন। পরে মুমুর্ষু অবস্থায় তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ছবি ধারণ করা হয়। পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে ওই ছাত্রীর মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এ টাকা না দেয়ায় ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান, প্রেমে রাজি করানোর জন্য স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করার পাশাপাশি তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে বিভিন্ন সময় আসাদুল তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। পরে তাকে ভয়ভীতি দেখালে তিনি আসাদুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ সম্পর্কের সূত্র ধরে আসাদুল তার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও নেন। এরপর সেই ভিডিও দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ব্ল্যাকমেইল করতেন আসাদুল।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি লোকলজ্জায় তিনি কাউকে বলতে পারেননি। পরে গত ৮ মার্চ সেই ভিডিও দেখিয়ে তার মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন আসাদুল। সেই টাকা দিতে না পারায় আসাদুল সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার কথা স্থানীয়দের কাছে শোনার পর লোকলজ্জায় ব্যাটারির অ্যাসিড পান করে আত্মহত্যা করেন তার মা।