ঝালকাঠির রাজাপুরে স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যার পর জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে জানায় এক নারী। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ওই নারীকে আটক করে।
রোববার (১২ মার্চ) মধ্যরাতে জেলা রাজাপুর উপজেলার মধ্য পটুয়াখালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
আটক সাফিয়া বেগম (৩২) নৈলা থানার মাঝির হাট ইউনিয়নের নসাশন গ্রামের প্রয়াত নজরুল ইসলাম মুন্সির মেয়ে।
নিহত রবিউল আউয়াল তালুকদার (৩৯) ওই গ্রামের প্রয়াত আবদুর রহমান তালুকদারের ছেলে। পেশায় তিনি একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন।
এ ব্যাপারে রাজাপুর-কাঠালিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাসুদ রানা বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে রবিউল ও তার স্ত্রী সাফিয়ার মধ্যে কিছুদিন আগে থেকে সম্পর্কের অবনতি হয়। এর জেরে রোববার রাতে সাফিয়া খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায় রবিউলকে। রাত দেড়টার দিকে হাত-পা, মুখ বেধে ধারালো ছুরি দিয়ে ঘুমের মধ্যে রবিউলের গলা কেটে ফেলে সাফিয়া। পরে ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধারসহ সাফিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
সাফিয়া হত্যার দায় স্বীকার করে দাবি করেন, তার স্বামী আড়াই মাস আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে জমিজমা ওই স্ত্রীর নামে লিখে দিয়েছে। দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সাফিয়া তার স্বামীকে জবাই করে হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, ২০০৫ সালে রবিউল ও সাফিয়া প্রেমের সম্পর্কে ঢাকায় বিয়ে করেন। তাদের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। বড় ছেলে রাফিন (১৬) নবম শ্রেণিতে পড়ে আর ছোট ছেলে সাকিব (১২) ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। রবিউল ইজিবাইক চালিয়ে ছেলেদের লেখাপড়া ও সংসার চালাতেন।
বর্তমানে রবিউল দ্বিতীয় বিবাহ করেছে বলে সাফিয়া সন্দেহ করে আসছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকত।
রাজাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় বলেন, রাতেই সাফিয়াকে আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে সকালে ময়নাতদন্তে ঝালকাঠি মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আবুল হোসেন তালুকদার একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।