সুলতানস ডাইনকে খাবারে খাসির মাংস বাদে অন্য প্রাণির মাংস দেয়ার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদফতর। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে তাদের কোনো মতামত নেই বলেও জানানো হয়েছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে সুলতানস ডাইনের খাবারের তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘সুলতানস ডাইনের বিষয়ে আমারা কোনো মতামত দিতে পারি না। কারণ, আমাদের কাছে কোনো স্যাম্পল নেই এবং টেস্ট করানোর সুযোগও নেই। এটি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ টেস্ট করাবে। তাদের সঙ্গে কথা বললে আপনারা জানতে পারবেন। আমরা অভিযান করে সেদিন আইন অনুযায়ী কোনো ব্যত্যয় পাইনি। আমরা অনেক রেস্টুরেন্টে অভিযান করে অনেক আইনের ব্যত্যয় পাই। কিন্তু সেদিন আমরা কিছুই পাইনি।’
রেস্তোরাঁটি সরেজমিনে তদন্ত এবং অভিযুক্তের মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য পর্যালোচনা করে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিউজ্জামান লিখিত বক্তব্যে বলেন, সুলতান’স ডাইন ‘মা বাবার দোয়া গোস্ত বিতান, কাপ্তান বাজার’ নামক ভেন্ডরের মাধ্যমে খাসির গোস্ত সংগ্রহ করে থাকে। কাপ্তান বাজারে খাসি জবাই করার সময় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মাঝে মধ্যে উপস্থিত থাকেন। ভেন্ডর নিজ দায়িত্বে মাংস অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে মাংস পৌঁছায়।
গত ৯ মার্চ অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মৌখিকভাবে ১৫০ কেজি খাসির মাংস সংগ্রহের কথা জানান। কিন্তু ভেন্ডর ১২৫ কেজি সরবরাহের কথা জানান। সন্দেহযুক্ত চিকন হাড়ের ব্যাপারে অভিযুক্ত জানান যে, ৭ থেকে ৯ কেজি ওজনের খাসির মাংস তারা ব্যাবহার করেন। আকারে ছোট হওয়ায় এসব খাসির হাড় চিকন হয়।
এদিকে যে মোবাইল নাম্বার (০১৭২৩৩০৯৯০২) থেকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল তাও বন্ধ পাওয়া যায়।
তাই খাসি বাদে অন্য প্রাণীর মাংসের ব্যবহার সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনকে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, মো. আব্দুল জব্বার মন্ডলসহ আরও অনেকে।
চলতি মাসের ২ তারিখ কনক রহমান নামের এক নারী গুলশানের সুলতানস ডাইন থেকে সাত প্যাকেট খাবার কেনেন। খাবার নিয়ে মহাখালী যাবার পর ফোন করে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজারকে ডাকেন তিনি। এছাড়া এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি অভিযোগ করেন, কাচ্চি বিরিয়ানিতে খাসির পরিবর্তে ‘বিড়ালের মাংস’ দেয়া হয়েছে।
চলতি মাসের ৫ তারিখ অভিযোগকারীরা একটি ভিডিও পোস্ট করেন ফেসবুকে। যেখানে দাবি করা হয়, সুলতানস ডাইনে বিড়ালের মাংস খাওয়ানো হয়। মুহূর্তেই ভাইরাল হয় সেই ভিডিওটি।
এ বিষয়ে সুলতানস ডাইনের গুলশান ব্রাঞ্চের ম্যানেজার কামাল আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগকারীরা বিষয়টি মীমাংসা করতে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন।’ আর প্রতিষ্ঠানটির সুপারভাইজার বিকাশ রয় বলেন, ‘অভিযোগকারী কনক রহমান ব্যবসা বন্ধের হুমকি দেন।’
সুলতানস ডাইনের গুলশান ব্রাঞ্চের জন্য রাজধানীর কাপ্তানবাজার থেকে মাংস কেনা হয়। প্রতিষ্ঠানটিকে মাংস সরবরাহকারী দোকান মালিকের ছোট ভাই সময় সংবাদকে জানান, মাংস নিয়ে করা এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন।
অভিযোগের বিষয়ে শুক্রবার (১০ মার্চ) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অভিযোগকারী কনক রহমান ও আব্দুল হাকিমকে ফোন করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে ফেসবুক থেকেও তারা ভিডিওটি সরিয়ে নেন।