লিগ ওয়ানের শিরোপাটা ডালভাত প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের জন্য। ফ্রান্সের ঘরোয়া অন্যান্য কাপও হরহামেশাই জেতে প্যারিসিয়ানরা। ইউরোপের এলিটের খাতায় নাম লেখাতে যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার বিকল্প নেই সেটা ভালোমতো জানা ক্লাবটির মালিকপক্ষের। তাই তো দুনিয়ার সেরা তারকাদের দিয়ে দল সাজিয়ে শিরোপাটা ছুঁতে চাওয়া। কিন্তু আরও একবার ব্যর্থ পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্রোজেক্ট।
কাতার বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় ও সেরা গোলদাতা খেলেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে। সেই সঙ্গে আছেন ২০১০ বিশ্বকাপজয়ী সার্জিও রামোস, ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার, ইউরোজয়ী জিয়ানলুইগি ডোনারুম্মা। পিএসজিতে তারার হাট বসিয়ে একটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন নাসের আল খেলাইফি। কিন্তু গতরাতে আরও একবার স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হয়েছে তাকে।
গতবার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হেরে শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেওয়া পিএসজি এবারও বিদায় নিয়েছে শেষ ষোলোতেই। এবার অবশ্য তাদের বিদায় করেছে ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ। লিওনেল মেসি-কিলিয়ান এমবাপ্পে টানা দ্বিতীয়বার ব্যর্থ দলকে কোয়ার্টার ফাইনালের মঞ্চে তুলতে।
তারকাসমৃদ্ধ দলের শেষ ষোলো থেকে বিদায়ের কারণ খুঁজতে গেলে অনেক কারণই হয়তো পাওয়া যাবে। তবে পিএসজির কোচ ক্রিস্টফ গালতিয়ের সহজ পথেই হাঁটলেন। পিএসজির এমন হতাশাজনক ফলের জন্য দায়ী করছেন বায়ার্নের বিপক্ষে দুই লেগে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন তারকার অনুপস্থিতি।
ঘরের মাঠের প্রথম লেগে চোটে ভুগছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। নিজেদের মাঠে ১-০ গোলে হারের ম্যাচে বাধ্য হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে তাকে নামাতে বাধ্য হয়েছিলেন কোচ গালতিয়ের। ইনজুরি থেকে ফিরে সে ম্যাচেই প্রথম মাঠে নেমেছিলেন মার্কো ভেরাত্তিও। আর দ্বিতীয়ই লেগের আগে তো চোটের কারণে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে নেইমার ও প্রেসনিল কিমপেম্বে। তাই বাঁচা-মরার লড়াইয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ তারকাদের না পাওয়াকেই এই হারের জন্য দায়ী করছেন কোচ।
ম্যাচ শেষে হারের কারণ খুঁজতে গিয়ে পিএসজি কোচ গালতিয়ের বলেন, ‘যখন আমরা সেরা ফুটবলটা খেলছিলাম, তখন গোল করতে পারিনি। এরপর আমরা হাস্যকর একটা গোল খেলাম। দুই লেগেই আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফুটবলারকে পাইনি। মূলত এটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। এমন ফল হতাশাজনক, কিন্তু আমাদের হজম করে নিতে হবে।’
মূলত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিততেই মেসি-এমবাপ্পে-নেইমারকে নিয়ে উচ্চাভিলাষী প্রোজেক্ট হাতে নেয় পিএসজি। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ব্যর্থ হওয়ায় পিএসজির স্কোয়াডে যে আগামী মৌসুমে বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে তা বলাই যায়। এই মৌসুম শুরুর আগে মাউরিসিও পচেত্তিনোকে সরিয়ে গালতিয়েরের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিল ক্লাবটির ম্যানেজমেন্ট। এমন ব্যর্থতার পর টিকবেন গালতিয়ের?
ক্লাবটিতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই ফরাসি কোচ বলেন, ‘এই বিষয়ে এখনই কথা বলা ঠিক হবে না। মূলত আমার থাকা না থাকা নির্ভর করে পিএসজি ম্যানেজমেন্ট ও প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের ওপর। স্বাভাবিকভাবেই হতাশা আছে। কারণ, এই টুর্নামেন্ট থেকে ক্লাবের চাওয়াটাই বেশি ছিল।’