তাইওয়ানে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে চীন, দাবি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর। এর মধ্যে সামরিক খাতে ব্যয় বিপুল পরিমাণে বাড়িয়েছে বেইজিং। এ পরিস্থিতিতে তাইওয়ান ঘিরে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।
চীন তাইওয়ানে সামরিক অভিযান পরিচালনার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে সম্প্রতি সতর্ক করেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস। সেই আশঙ্কাকে আরও গভীর করে তুলেছে সম্প্রতি সামরিক খাতে চীনের বিপুল ব্যয়বৃদ্ধির ঘোষণা।
২০২৩ সালের জন্য ২২৪ বিলিয়ন ডলারের বিশাল প্রতিরক্ষা বাজেট ঘোষণা করেছে চীন। সামরিক এই ব্যয় বৃদ্ধি আগের বছরের থেকে ৭ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৮১৬ বিলিয়ন ডলারের পর চীনের সামরিক ব্যয়ই বিশ্বে সর্বোচ্চ।
গেল কয়েক বছর ধরেই সামরিক ব্যয় বাড়িয়ে চলেছে চীন। ২০২২ সালেও সামরিক ব্যয় ৭ দশমিক ১ শতাংশ বাড়িয়েছিল দেশটি। বেইজিংয়ের এই অব্যাহত সামরিক ব্যয় বৃদ্ধিতে দুশ্চিন্তায় পশ্চিমারা। চীনের এই সামরিক ব্যয়ের সঙ্গে গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকের জাপানের সামরিক খাতে ব্যয়ের মিল খুঁজে পাচ্ছেন তারা।
পাশাপাশি চীনের রাজনৈতিক মহলের ওপর দেশটির সামরিক বাহিনীর অব্যাহত প্রভাব বৃদ্ধিরও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এই বাজেটের মাধ্যমে। গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে জাপানের পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে দেশটির সামরিক বাহিনী। যার ফলশ্রুতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে জাপান।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস এর ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে উইলিয়াম বার্নস জানান, ২০২৭ সালের মধ্যেই তাইওয়ানে সামরিক অভিযান চালানোর ব্যাপারে চীনা সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
তবে চীন তাইওয়ানে হামলা চালালে সেই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রও জড়িযে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চীনের হাত থেকে তাইওয়ানকে রক্ষায় দৃঢ় মনোভাব রয়েছে ওয়াশিংটনের। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এ ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছেন। এ পরিস্থিতিতে তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সংঘাত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করতে পারে বলে শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
পশ্চিমা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের মতে, তাইওয়ান প্রশ্নে কোনো ছাড় দিতে নারাজ চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাদের দাবি, জিরো কোভিড নীতির কারণে ধাক্কা খেয়েছে চীনের অর্থনীতি। অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশবাসীর মনোযোগ সরিয়ে নিজের শক্তিশালী ভাবমূর্তি বজায় রাখতেও তাইওয়ানে হামলা করতে পারেন প্রেসিডেন্ট শি। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে সামরিক বাজেট বৃদ্ধি সেই বিষয়টিকেই ইঙ্গিত দেয় বলে মনে করা হচ্ছে।