আন্তজার্তিক মুদ্রা তহবিলের (আইএফএম) ঋণ পেতে সংস্থাটির আরেকটি শর্তের কাছে মাথা নত করছে পাকিস্তান সরকার। শর্ত অনুযায়ী আগামী জুলাই থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩.২৩ রুপি আদায় করা হবে।
দেশটির গণমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিদ্যুতে খরচের বিশাল বোঝা জনগণের ঘাড়ে চাপানোর উদ্দেশ্য হলো – পরবর্তী অর্থবছরজুড়ে বিদ্যুৎখাতের ঋণ ও দায়বদ্ধতা পরিশোধে ৩৩৫ বিলিয়নেরও বেশি অর্থ জোগাড় করা। করাচি বিদ্যুৎ কোম্পানি বা কে-ইলেক্ট্রিক এতে দ্বিগুণ বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। কারণ সরকার করাচি পাওয়ার ইউটিলিটিকে চলতি মাসে ইউনিট প্রতি ১.৫৬ টাকা এবং এপ্রিল ও মে মাসে ইউনিট প্রতি ৬.১১ টাকা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছে। দেশের অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোও সমান দর ঠিক করতে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এতে জনরোষ আরও বাড়তে পারে।
অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারের সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক সমন্বয় কমিটির (ইসিসি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পাকিস্তান সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডনকে জানান, বিদ্যুতের দর বৃদ্ধির ঘোষণা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার আরেকটি প্রস্তাব ওঠানোর কথা ছিল মন্ত্রিপরিষদে। সেটি হলো – পিক আওয়ারে (রাত ৮টার পর) বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য বিদ্যুতের দর দ্বিগুণ করা। জ্বালানি সংরক্ষণের জন্য সূর্যাস্তের পর বাজার বন্ধ করার উদ্যোগে সরকার ব্যর্থ হওয়ার পর এ প্রস্তাব তোলার কথা জানানো হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সরকার প্রাদেশিক সরকারকে ব্যবসা ও দোকানপাট বন্ধ করতে বলতে পারে না। তবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কৌশল নিতে পারে, যাতে অর্থ যোগান ও অন্যান্য চাহিদা পূরণে পিক আওয়ারে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে উৎসাহিত করা যায়।
সরকার এরই মধ্যে চলমান অর্থবছরের বাকি চার মাসের (মার্চ থেকে জুন) জন্য প্রতি ইউনিটে অতিরিক্ত অর্থ বা সারচার্জ ৩.৩৯ রুপি আদায়ের অনুমোদন দিয়েছে। পাওয়ার হোল্ডিং প্রাইভেট লিমিটেডের প্রায় ৮০০ বিলিয়ন রুপি ঋণ পরিশোধে আগামী অর্থবছরজুড়ে এটি অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছিল আইএমএফ।
অতিরিক্ত এ সারচার্জ অব্যাহত রাখতে আইএমএফের দাবিতে আপত্তি জানিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইএমএফের বেলআউট সুরক্ষিত করতে এবং সার্বভৌম ঋণ খেলাপ এড়াতে সরকার হার মেনে নিয়েছে।