মেহেদী হাসান, শরীয়তপুর ॥
জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ দ্বারাই থামানো যাচ্ছে না শরীয়তপুরে বিভিন্ন স্থানে নদী বা খাল থেকে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের কাজ।
বছরের পর বছর জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের নাকের ডগায় এ অবৈধ কাজটি চললেও প্রশাসন অনেকটা নির্বিকার। জেলা সদরসহ ৬ টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নদীতে প্রায় অর্ধশত ড্রেজিং মেশিন বসিয়ে বালুদস্যুরা অবাধে বালু উত্তোলন করছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নদী ভাংগন।
একদিকে বালুদস্যুরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা আর অন্য দিকে নদী ভাংগনে ঘর-বাড়ি, বসত-ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তারা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কিছু কিছু ড্রেজিং মেশিন চালকদের জেল-জরিমানা করেছেন। এদিকে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নদী থেকে বালু উত্তোলনকারী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শরীয়তপুর জেলা সদরসহ নড়িয়া, জাজিরা, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় পদ্মা ও মেঘনার শাখা নদীতে বা খালের অর্ধশত স্থানে অবৈধভাবে ড্রেজিং দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে। নড়িয়া উপজেলার ঘরিসার, সুরেশ্বর, নন্দনসার, ডিংগামানিক, নওপাড়া, চরআত্রা, ভোজেশ^র, ডগ্রি, জাজিরা উপজেলার কাজীরহাট, নাওডোবা, সেনেরচর, কুন্ডেরচর, বিলাশপুর, লাউখোলা, ডামুড্যা উপজেলার পূর্ব ডামুড্যা, কনেশ^র, সিড্যা, ধানকাঠি, ইসলামপুর, গোসাইরহাট উপজেলার ইদিলপুর, কোদালপুর, সদর উপজেলার ডোমসার, বিনোদপুর, চন্দ্রপুরসহ বিভিন্নস্থানে ড্রজিং মেশিন বসিয়ে নদী ও খাল থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু ও মাটি।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, তহশীল অফিস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের অফিস ম্যানেজড করেই তারা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, নদী থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাংগন। এছাড়াও নদীতে অবৈধ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ফলে এসব এলাকায় নদীর পাড়ে অবিস্থিত আবাদি জমি ও ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। এদিকে জেলা শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রধান প্রধান সড়কের উপর দিয়ে ড্রেজিংয়ের পাইপ বসানোর কারণে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।
তাছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন ঘর-বাড়ির উপর দিয়ে ড্রেজিংয়ের মোটামোটা পাইপ বসানোর কারণে অনেক সাধারণ মানুষের দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বরাবরের মতো উত্তর যে, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ড্রেজিং মেশিন চালকদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে।