শ্রীলঙ্কায় পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে বিরোধী দল ‘ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টি’র সমর্থকরা। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ করেন দলটির কয়েক হাজার সমর্থক। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানায়, রোববার মুহুর্মুহু কাঁদানের গ্যাস ছোঁড়ার শব্দে ভারি হয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো। পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে দেশটিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিরোধী দল ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির সমর্থকরা।
এদিন সড়কে নেমে বিক্ষোভ করেন বিরোধী দলের হাজারো সমর্থক। পুলিশি বাধা ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজধানীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। এলাকাটিতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন রয়েছে। আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে একপর্যায়ে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে নিরাপত্তাবাহিনী। ছত্রভঙ্গ করতে ব্যবহার করা হয় জলকামান।
বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকলে মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হন বলে জানা গেছে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করে বলেন, রনিল বিক্রমাসিংহে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি। কাজেই তিনি কোনোভাবেই প্রেসিডেন্ট হতে পারেন না। তিনি চোর, ডাকাত, মাদক কারবারি ও অপরাধীদের থেকে ১৩৩ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। তার কাছে জনগণের সমর্থন নেই। আমাদের কাছে সাধারণ মানুষের সমর্থন রয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে পর্যটন ব্যবসায় ধস, ত্রুটিপূর্ণ কর ব্যবস্থা, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে নেমে যাওয়ায় গত বছর থেকেই চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির বিদেশি ঋণের পরিমাণ এখন ৫১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৭ সালের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে অন্তত ২৮ বিলিয়ন ডলার। অথচ দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হচ্ছে। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো জরুরি পণ্যও আমদানি করতে পারছে না দেশটি। সংকট উত্তরণে আর্ন্তজাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলছে দেনদরবার।
এ অবস্থায় পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে আগামী মাসে হতে যাওয়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থগিত করতে বাধ্য হয় শ্রীলঙ্কা। দেশটির নির্বাচন কমিশন জানায়, আগামী ৯ মার্চ স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিতের পর আগামী ৩ মার্চ ধার্য করা হবে নির্বাচনের পরবর্তী তারিখ। এমনকি নির্বাচন আয়োজনে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ চেয়ে পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে আবেদন করা হবে বলেও জানানো হয়।