ইরান ইচ্ছাকৃতভাবে ৮৪ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে জানিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের করা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইরানের আনবিক সংস্থা দাবি করেছে, তারা কখনোই শতকরা ৬০ ভাগের বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেনি।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ দাবি করে, আইএইএর পরিদর্শকরা গত সপ্তাহে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে শতকরা ৮৪ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রমাণ রয়েছে।
এ বিষয়ে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালবান্দি রোববার গভীর রাতে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তাসংস্থা ফার্সকে জানিয়েছেন, ইরানের কোনো পরমাণু স্থাপনায় এখন পর্যন্ত শতকরা ৬০ ভাগের বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হয়নি।
তিনি বলেন, কোথাও ৬০ এর চেয়ে বেশি মাত্রার ইউরেনিয়ামের কণা পাওয়ার অর্থ এই নয় যে, ইরান ‘ওই’(৮৪) মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে। এটি খুব স্বাভাবিক, যে কোনো মুহূর্তে সেন্ট্রিফিউজ ক্যাসকেডের ফিড হ্রাসের ফলেও ঘটতে পারে।
কামালবান্দি আরও বলেন, এই জাতীয় সমস্যা এমন কিছু ছিল না যে আইএইএ এই বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন দেবে। তার দেশের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে বিকৃত তথ্য তুলে ধরতেই পশ্চিমা গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ব্লুমবার্গ প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, আর ৬ শতাংশ ইউরেনিয়াম হলে পারমাণবিক বোমা বানাতে পারবে ইরান। পারমাণবিক বোমা বানাতে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উন্নীত করার প্রয়োজন হয়। ইরান ৮৪ শতাংশ ইউরেনিয়াম উন্নীত করে ফেলেছে।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সঙ্গে করা ‘২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি’ থেকে বের করে নেন। ওই চুক্তির শর্ত ছিল, ইরানের ওপর পশ্চিমা বিশ্ব নিষেধাজ্ঞা শিথিল করবে আর ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে না।
কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে তেহরানের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইরান ২০১৯ সাল থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে থাকে। যদিও বরাবরই দেশটি বলে আসছে, পারমাণবিক বোমা বানানোর মতো কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।