বিচারব্যবস্থা সংস্কারকে কেন্দ্র করে গভীর সংকটে ইসরাইল। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী তেল আবিবের রাস্তায় বিক্ষোভে নামেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী স্লোগান দেন তারা। ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করে গণতন্ত্র নিশ্চিত করার দাবি তাদের।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আরব নিউজের প্রতিবেদনে ওঠে আসে এ তথ্য।
গত ২৯ ডিসেম্বর ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন কট্টরপন্থি ডানপন্থি নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ক্ষমতা গ্রহণের পরই বিচারব্যবস্থার সংস্কার এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা উন্মোচন করেন তিনি। নতুন ওই সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের যেকোনো সিদ্ধান্ত বাতিলের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ইসরাইলের পার্লামেন্টকে। শুরু থেকে নেতানিয়াহুর উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছে সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, এ সংশোধনী বিচারব্যবস্থাকে দুর্বল করবে। এরপর থেকেই উত্তপ্ত দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন।
এক মাসের বেশি সময় ধরে এ ইস্যুতে উত্তাল ভূখণ্ডটির রাজপথ। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী তেল আবিবের রাস্তায় নামে হাজার হাজার মানুষ। ইসরাইলের পতাকার পাশাপাশি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদী স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
একজন আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমি এখানে আন্দোলন করতে এসেছি। ইসরাইলের গণতন্ত্রের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে। আমরা চাই, ইসরাইলে গণতন্ত্র থাকুক। আমি মারাত্মক ভয়ে আছি আমাদের ভূখণ্ডে একনায়কতন্ত্র কায়েম হয় কি না। আমি আমার সন্তানের জন্য গণতান্ত্রিক ইসরাইলে বাস করতে চাই।’
আরেকজন বলেন, ‘আমি আমার গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য আন্দোলন করছি। কিছু রাজনীতিবিদের অসৎ উদ্দ্যেশ্য পূরণ, তাদের জেলে যাওয়া আটকানোর পাশাপাশি ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের কারণে ইসরাইলের গণতন্ত্র ভেঙে দেয়া হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
বিচারব্যবস্থা সংস্কারকে কেন্দ্র করে গভীর সংকটে ইসরাইল। পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে রাজপথ, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের ঝড়।
এদিকে এর আগে দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ৯টি বসতিকে বৈধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইল। সাম্প্রতিক সময়ে জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের কয়েকটি হামলা চালানোর পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বলছে, তারা ইসরাইলের এ সিদ্ধান্তে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’৷
জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরাইলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে। তাদের বক্তব্য: ‘নতুন করে ১০ হাজার বাড়ি নির্মাণ এবং অতীতে ইসরাইলের আইনে অবৈধ বলে বিবেচিত ৯টি বসতিকে বৈধ করার ইসরাইলি সরকারের ঘোষণায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’