ইরান গত ৭ ফেব্রুয়ারি ‘ঈগল-৪৪’ নামে নতুন ভূগর্ভস্থ এক বিমানঘাঁটি উদ্বোধনের ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিও থেকে এবং মার্কিন স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে বিমানঘাঁটিতে যুদ্ধবিমানের ছবি দেখা গেছে। তবে অত্যাধুনিক এ যুদ্ধবিমান ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি নয়। বিমানগুলো দেখতে রাশিয়ার অত্যাধুনিক এসইউ–৩৫ যুদ্ধবিমানের মতো। ইরানের কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়ার কাছ থেকে বিমানগুলো ক্রয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে রুশ জেট এসইউ-৩৫ কেনার কথা বলে আসছে। তবে রাশিয়া ইরানের সঙ্গে এই বিষয়ে এখনো চুক্তি হয়নি। তবে ভিডিও এবং স্যাটেলাইট চিত্রগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইরান ফাইটার জেটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং সেগুলো পাওয়ার ব্যাপারে ব্যাপক আশাবাদী। চলতি বছরের শেষ নাগাদ নির্মাণাধীন ঘাঁটিতে বিমানগুলো মোতায়েন করা হবে বলে দেশটির কর্মকর্তারা আশা করছেন। সেরকমটি হলে তা হবে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে ইরানের বিমানবাহিনীতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
ইউক্রেন আক্রমণের পরে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা মস্কো ও তেহরানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা ত্বরান্বিত করেছে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কাও প্রবল হচ্ছে। এরই মধ্যে ইরান-রাশিয়া অক্ষের ঘণিষ্ঠতাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন পশ্চিমা নীতি নির্ধারকেরা। আলোচানাও শুরু হয়েছে। মিউনিখ নিরাপত্ত সম্মেলেনে পশ্চিমা বিশ্বের আলোচ্যসূচির একটি বড় অংশ দখল করে রেখেছিল ইরান-রাশিয়ার মিত্রতা।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়া ও ইরানের মধ্যকার মৈত্রি নিয়ে নিজেদের সতর্ক অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি মস্কো-তেহরান সামরিক সহযোগিতাও তাদের মাথাব্যথার কারণ।
বিষয়টি ফুটে উঠে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনেরে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথেরিন কলোনা এবং জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবকের বৈঠকে বিষয়টি আলোচিত হতে দেখে।
ব্লিঙ্কেনের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘তারা ইরান ও রাশিয়ার মধ্যকার গভীরতর দ্বিমুখী সামরিক সহযোগিতা এবং এই অঞ্চল ও এর বাইরের অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে তাদের উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করেছেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘তারা ইরানের পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার সাথে সহযোগিতার অভাব সম্পর্কে তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন। তারা বৈঠকে ইরানকে তার বর্তমান পথ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন।’