ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর বিধ্বস্ত দুই দেশ তুরস্ক ও সিরিয়ার চিত্র অনেকটাই আলাদা। উদ্ধার অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল দ্রুত পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এরদোয়ান সরকার। অন্যদিকে এখনো ত্রাণের জন্য হাহাকার যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায়। দেশটির বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে আসে এ তথ্য।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এখনো চলছে উদ্ধারকাজ। স্বজনের লাশের অপেক্ষায় অনেকেই ভিড় করছেন বিধ্বস্ত ভবনের সামনে।
তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরের স্টেডিয়ামে অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। ঘরবাড়ি হারানোদের সরবরাহ করা হচ্ছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি, দেয়া হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। তবে কোনো কিছুতেই যেন ভূমিকম্পের ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারছেন না তারা।
অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া একজন বলেন, আমরা নিজের ঘরে ফিরে যেতে চাই। ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর আমরা অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এখনো সবাই ভয়ে আছি। আরেকজন বলেন, ‘আমরা যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমি যেন সব বোধশক্তি হারিয়ে ফেলেছি। আমার পরিবারের সবাই ভূমিকম্পের সময় কোথায় ছিল। আমি কীভাবে ঘর থেকে বের হয়েছি, কিছুই মনে করতে পারছি না।’
দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ভেঙে ফেলে পুনর্নির্মাণের কাজ শুরুর কথা জানিয়েছে তুরস্কের সরকার। এক টুইট বার্তায় দেশটির পরিবেশ ও নগরায়ণমন্ত্রী মুরাত কুরুম জানান, সামান্য ক্ষতি হয়েছে এমন সব ভবন ভেঙে নিরাপদ বাড়ি তৈরি করা হবে।
তবে তুরস্কে উদ্ধার অভিযান ও ত্রাণ কার্যক্রম সমানতালে এগোলেও উল্টো চিত্র সিরিয়ায়। ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এখনো পৌঁছানো যাচ্ছে না চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী। দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয়, খাবার, পানি ও নিরাপত্তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তুরস্ক হয়ে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ত্রাণ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো বাধামুক্ত করতে সীমান্ত খুলে দিতে বাশার আল আসাদ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি।