তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের সাতদিন পর তিন শিশুকে অলৌকিকভাবে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তুরস্কের আদিয়ামান, হাতেই ও কারামানমারাস থেকে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের মধ্যদিয়ে এদের উদ্ধার করা হয়, যাদের বয়স ৫ থেকে ১৩ বছর মধ্যে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সাতদিনের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর হাতেই প্রদেশের আন্তাকিয়া শহরে এক ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে প্রথমে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। কিশোশের নাম ‘কান’ বলে জানা গেছে।
তাকে উদ্ধারের পরপরই করতালির মধ্যদিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন উদ্ধারকর্মীরা। একটানা সাতদিন খাবার ও পানি ছাড়া কীভাবে সে বেঁচে ছিল তা নিয়ে বিস্ময়ও প্রকাশ করেন অনেকে। এ ঘটনাকে অলৌকিক বলে মনে করছেন খোদ উদ্ধারকর্মীরা। উদ্ধারের পরপরই কানকে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
একই দিনে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় আরেক শহর আদিয়ামান থেকে ছয় বছর বয়সী এক শিশুকে বিস্ময়করভাবে জীবিত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর গুরুতর অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই স্থানে আটকাপড়া ওই শিশুর বড় বোনকেও জীবিত উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। এছাড়াও, এদিন কারামানমারাসে দশ বছর বয়সী আরও এক শিশুকে জীবিত উদ্ধারের খবর জানিয়েছে আল-জাজিরা।
এত এত মৃতদেহের মাঝে জীবিত উদ্ধারের এ ঘটনাগুলোতে যেন উদ্ধার কাজে অনেকটা প্রাণ ফিরে পাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। এসব ভবনের নিচে এখনো আটকে আছে বহু মানুষ। তবে তারা জীবিত কিনা মৃত সে বিষয়ে এখনো কিছু জানাতে পারেনি উদ্ধারকর্মীরা। তবে, আটকেপড়াদের জীবিত উদ্ধারের সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
এদিকে, গেল সোমবার তুরস্কের ভূমিকম্পে গৃহহীন হয়েছেন দশ লাখের বেশি মানুষ।
ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ইস্তাম্বুলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রাবাস ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পেরিয়ে গেছে আটদিন। এর মধ্যে শুধু তুরস্কে ধসে পড়েছে ছয় হাজারের বেশি ভবন। প্রাণ হারিয়েছে বহু মানুষ। এছাড়া, প্রতিনিয়তই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
এদিকে জীবিত থেকেও সব হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে জায়গা না পেয়ে মসজিদে বসবাস করছেন। এছাড়া খাবারও বিশুদ্ধ পানির অভাব জীবন আরো দূর্বিষহ করে তুলছে তাদের।