ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ পরও ধ্বংসস্তূপে মিলছে প্রাণের সন্ধান। ১৫৯ ঘণ্টা পর তুরস্কের হাতায়া প্রদেশে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বাবা-মেয়েকে। স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৩ হাজার। তীব্র ঠান্ডার পাশাপাশি খাবার ও থাকার জায়গার সংকটে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।
১৫৯ ঘন্টা, সময়টা নেহাত কম নয়। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, এই দীর্ঘ সময় ধ্বংস্তূপের নিচে চাপা পড়ে ছিল ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী। অবশেষে উদ্ধারকর্মীরা তার সন্ধান পান। কিছু সময়ের ব্যবধানে তার বাবাকেও জীবিত উদ্ধারে সফল হন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে ভূমিকম্পের সাত দিন পেরিয়ে গেছে। এখনও ধ্বংস্তূপের নিচ থেকে মিলছে প্রাণের সন্ধান। শত বাধা, কষ্ট উপেক্ষা করে উদ্ধারকারীরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ধ্বংস্তূপের নিচ থেকে জীবিত কিংবা মৃত সবাইকে বের করে আনতে। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের গাজিয়ানতেপ ও আন্তাকিয়ায় শিশুসহ আরও এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে এখনও হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বা তারও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।
এদিকে তুরস্কের কাহরামানমারাসের বেশ কিছু এলাকায় উদ্ধার অভিযান বন্ধ হয়ে গেছে। চলছে ধ্বংস্তূপ পরিষ্কারের কাজ। তা সত্বেও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা তাদের নিখোঁজ প্রিয়জনদের সন্ধানে ধসে পড়া ভবনগুলোর সামনে ভিড় করেন। তীব্র শীতে আগুন জ্বালিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন স্বজনদের জীবিত দেখার কিংবা মরদেহ পাওয়ার আশায়।
গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ধ্বংসের নগরীতে পরিণত হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকা। দুই দেশেই বর্তমানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে। ঘরবাড়ি, স্বজন হারিয়ে মানবেতর দিন কাটছে সেখানকার বাসিন্দাদের। খাবারের জন্য চলছে হাহাকার।
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার অবস্থা একটু বেশিই করুণ। দেশটিতে মাথার ওপর ছাদ নেই বহু মানুষের। পর্যাপ্ত সহায়তাও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে সহায়তা পাঠানোর জন্য চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো পরিদর্শনে সংস্থাটির প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রিয়াসুসের যাওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।