চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) ৩৩ নম্বরসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভয়ংকর ফাঁদ পেতেছে দালালচক্র। চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হলেই প্রেসক্রিপশন নিয়ে শুরু হয় কাড়াকাড়ি। দালালের পছন্দের ফার্মেসি থেকে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য করা হয় রোগীদের। নতুন রোগী ভর্তি হতে অন্তত ৫টি পয়েন্টে দিতে হয় টাকা। এমনকি সুযোগে বুঝে হাতিয়ে নেয় টাকা ও মোবাইল ফোনও।
এক ভুক্তভোগী রোগীর বাবা ইসমাইল বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তির পর ওয়ার্ডবয় ও আয়ার সহায়তায় প্রেসক্রিপশন কেড়ে নেয় দালালচক্র। ফাঁদে পড়ে পূর্ব গেটের বি কে ফার্মেসি থেকে ১১০০ টাকার ওষুধ কিনতে হয় ২ হাজার ৮০০ টাকায়।
কক্সবাজার থেকে আসা ৭০ বছর বয়সি মোস্তাফা আহমদ বলেন, শুধু প্রেসক্রিপশন নয়; নিরীহ রোগীদের অসহায়ত্বের সুযোগে দালালচক্র হাতিয়ে নেয় টাকাও। তারা কৌশলে তার ১১ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগী আরও অনেক রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, শুধু ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড নয়, মেডিকেলের প্রতি পদে পদে দিতে হয় টাকা। ট্রলি, লিফট, ওয়ার্ডবয়, আয়া ও নিরাপত্তা কর্মীদের টাকা না দিলে পাওয়া যায় না কাঙ্ক্ষিত সেবা। প্রতি রাতেই ঘুমন্ত রোগী ও স্বজনদের হারাতে হয় মোবাইল ফোন।
ঢোকার সময় ১০০ টাকা, ট্রলি নেয়ার সময় ২০০ টাকা; আবার দারোয়ানও টাকা চায়। লিফটের কার্ড দেয়ার পরও টাকা দিতে হয় বলে অভিযোগ তাদের।
চমেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরে আলম আশিক জানান, গত ৬ মাসে ৭৫ জন দালাল ও ৩টি ওষুধ চক্রকে আটক করেছে পুলিশ। অব্যাহত আছে অভিযান।
চমেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সামীম আহসান বলেন, আমাদের কর্মচারী ও ওয়ার্ড মাস্টারদের নিয়ে একটা টহল দল সার্বক্ষণিকভাবে এটা চেক করছে। এছাড়া কেউ ধরা পড়লে আমরা পুলিশে সোপর্দ করছি।
চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি রোগী সেবা গ্রহণ করে থাকেন।