ভারতে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর নাটকীয় উত্থানের পেছনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরাসরি ভূমিকা ও কারসাজি আছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। তবে পার্লামেন্টে তোলা এ অভিযোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি তার জবাব এড়িয়ে গেছেন। খবর বিবিসির।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ওপর ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লোকসভায় প্রায় দেড় ঘণ্টার দীর্ঘ ভাষণ দেন। তবে তার বিরুদ্ধে বিরোধীদের তোলা সুনির্দিষ্ট অভিযোগগুলোর একটিরও জবাব দেননি তিনি। এমনকি তার বক্তব্যে আদানি নামটি একবারের জন্যও উচ্চারণ করেননি মোদি। উল্টো ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস আমলকে ভারতের ইতিহাসে আর্থিক কেলেঙ্কারি আর সহিংসতার একটি অন্ধকার পর্ব বলে উল্লেখ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ রফতানির বিষয়টি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। লোকসভায় মোদির সঙ্গে আদানি গ্রুপের মালিক গৌতম আদানির ঘনিষ্ঠ ছবি দেখিয়ে রাহুল দাবি করেন, আদানি ও মোদি মিলে মূলত ব্যবসা করতে নেমেছেন। মোদি এবং তার সরকার আদানিকে সুবিধা দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) লোকসভায় দীর্ঘ ৫৩ মিনিট ধরে বক্তব্য দেন রাহুল। এর মধ্যে অধিকাংশ সময়ই তিনি বিজেপির সার্বিক নীতি, বিশেষ করে অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন।
বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ রফতানির পেছনে মোদির হাত রয়েছে উল্লেখ করে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) প্রথমবার বাংলাদেশ সফরে গিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন এবং কিছুদিন পর বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করে।’
অস্ট্রেলিয়ায় আদানি গ্রুপের কয়লাখনি কেলেঙ্কারির কথা উল্লেখ করে রাহুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়া সফরে যান এবং এর পরপরই স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ভোজবাজির মতো আদানি গ্রুপকে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়ে দেয়।’
এ সময় রাহুল শ্রীলঙ্কায় আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আদানির পুরোনো সম্পর্কের খতিয়ান টেনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের এ নেতা বলেন, ‘সম্পর্কটি শুরু হয়েছে অনেক বছর আগে, যখন নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। পরে যখন ভারতের বেশির ভাগ ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রীকে (মোদি-গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী) প্রশ্নের মুখোমুখি করেছিল, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, তখন কেবল একজন ব্যক্তি তার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।’