বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ রপ্তানির বিষয়টি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। দেশটির পার্লামেন্ট লোকসভায় মোদির সঙ্গে আদানি গ্রুপের মালিক গৌতম আদানির ঘনিষ্ঠ ছবি দেখিয়ে রাহুল দাবি করেন, আদানি এবং মোদি মিলে মূলত ব্যবসা করতে নেমেছেন। মোদি এবং তার সরকার আদানিকে সুবিধা দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) লোকসভায় দীর্ঘ ৫৩ মিনিট ধরে বক্তব্য রাখেন রাহুল। এর মধ্যে অধিকাংশ সময়ই তিনি বিজেপির সার্বিক নীতি বিশেষ করে অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন।
বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ রপ্তানির পেছনে মোদির হাত রয়েছে উল্লেখ করে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) প্রথমবার বাংলাদেশ সফরে গিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন এবং কিছুদিন পর বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষর করে।’
অস্ট্রেলিয়ায় আদানি গ্রুপের কয়লা খনি কেলেঙ্কারির কথা উল্লেখ করে রাহুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়া সফরে যান এবং এর পরপরই স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ভোজবাজির মতো আদানি গ্রুপকে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়ে দেয়।’ এ সময় গান্ধী শ্রীলঙ্কায় আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আদানির পুরোনো সম্পর্কের খতিয়ান টেনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, ‘সম্পর্কটি শুরু হয়েছে অনেক বছর আগে, যখন নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। পরে যখন ভারতের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রীকে (মোদি-গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী) প্রশ্নের মুখোমুখি করেছিল, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল; তখন কেবল একজন ব্যক্তি তার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।’
ভারত জোড়ো যাত্রা শেষে লোকসভায় ফেরা রাহুল গান্ধী মোদির প্রতি আদানির ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে আরও বলেন, ‘এটি প্রশংসনীয়, তিনি সবসময় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুগত ছিলেন এবং তিনি মোদিকে একটি পুনরুজ্জীবিত গুজরাটের ধারণা তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন। এবং এর ফলাফল হিসেবে গুজরাটে তার (আদানির) ব্যবসার ব্যাপক বৃদ্ধি ও প্রসার লাভ করে।’ রাহুল গান্ধী আরও বলেন, তবে আসল জাদু শুরু হয় ১৪ সালে মোদি দিল্লিতে যাওয়ার পর থেকে (প্রধানমন্ত্রী হওয়া পর থেকে)।