আট বন্ধু মিলে তৈরি করেছে চোরচক্র। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে ঘুরতে টার্গেট ঠিক করেন তারা। চুরি করতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ৫ মিনিট।
রাজধানীর পল্লবীর একটি বাসা থেকে ১৮ লাখ টাকা এবং ১৭ ভরি স্বর্ণ চুরির মামলা তদন্ত করতে গিয়ে চক্রটির সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে দুই বন্ধুকে। আর পুলিশ বলছে, আট বন্ধুর চোরচক্রে আছে নারী সদস্যও।
গত ২২ জানুয়ারি বিকেল ৪টা ৪৮ মিনিট। রাজধানীর পল্লবীর একটি বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে পর্যবেক্ষণে দেয়া যায়, প্রথমে টার্গেট করা বাসাটিতে প্রবেশ করে দুজন। দুই মিনিট পর আরও দুজন আসেন। ৪টা ৫৪ মিনিটে বাসাটি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় তাদের। এ ৬ মিনিটেই তাদের মিশন সফল হয়। তারা বাসাটির তৃতীয়তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে চুরি করে নিয়ে যান ১৮ লাখ টাকা এবং ১৭ ভরি স্বর্ণ।
ডিবি জানিয়েছে, ওই ঘটনায় হওয়া মামলা তদন্ত করতে গিয়ে আট বন্ধুর একটি চোরচক্রের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে দুই বন্ধুকে। এ চক্রটি দিনে রাতে চুরি করতে দক্ষ। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে ঘুরতে তারা টার্গেট নির্ধারণ করেন। কোনো বাসার গেট খোলা দেখলেই প্রবেশ করেন সেখানে। তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে চুরি শেষ করতে তাদের সময় লাগে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবিপ্রধান) মো. হারুন অর রশিদ বলেন, গ্রেফতারকৃত দুই বন্ধুর মধ্যে মামুন দুই মাস আগে চুরির মামলায় কারাগার থেকে বের হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলাও আছে। পেশায় তিনি নাপিত। মোহাম্মদ আলী পেশায় রেন্ট এ কারের চালক হলেও তার বিরুদ্ধেও চুরির মামলা আছে একাধিক।
তিনি আরও বলেন, তারা দিনের বেলা সারা দিন ঘোরাফেরা করে তথ্য সংগ্রহ করে। আবার ওই এলাকায় চোরের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক রয়েছে, তারাও সেই কাজে তাদের সহায়তা করে থাকে। কারণ হচ্ছে এলাকায় চুরি করলে মানুষ তো চিনে ফেলে, তাদের কাজটি হচ্ছে তাদের দেখিয়ে দেয়া। এভাবে দিনের পর দিন চুরি সংঘঠিত হচ্ছে। আমাদের সব টিমকে নির্দেশ দেয়া আছে, চুরির ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে যেন বিবেচনা করা হয়।
শুধু গ্রেফতার নয়, অপরাধী কেন বারবার একই অপরাধে জড়াচ্ছেনে সেই কারণ উদ্ঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সমাজ ও অপরাধ বিশেষক ড. তৌহিদুল হক।
তৌহিদুল হক বলেন, কারও মধ্যে যদি এমন হয় তার অর্থ নেই, সে কর্মহীন; সে কাজ করতে চায়, কিন্তু কাজ জোগাড় করতে পারছে না, তাকে কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দিতে হবে। এ ধরনের চোরের মধ্যে একটি গোষ্ঠী পাওয়া যাবে, যারা মাদকাসক্ত। এ ধরনের চোরদের পুনর্বাসন ও কাজের সুযোগ করে দিতে হবে।