ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘প্রাণে না মারার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতকে পুতিন এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে এক সাক্ষাৎকারে জানান বেনেত।
গত বছর ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেত মস্কো সফরে গেলে পুতিন তাকে এই প্রতিশ্রুতি (জেলেনস্কিকে হত্যা না করার) দিয়েছিলেন। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে এ কথা জানান বেনেত।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। আসন্ন ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এর মধ্যেই পুতিনের সেনারা কিয়েভে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জেলেনস্কি প্রশাসনের।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ জানান, যুদ্ধের এক বছর পূর্তিতে ‘প্রতীকী’ হামলা চালাতে পারে মস্কো। সামরিক দিক থেকে এর কোনো যুক্তি নেই, কেননা তাদের সেনারা পুরোপুরি প্রস্তুত না। তবুও তারা এ হামলা চালাবে।
তবে রুশ সেনাদের প্রতিহত করার মতো সক্ষমতা ইউক্রেনের রয়েছে উল্লেখ করে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা জানান, খুব শিগগিরই ১২০ থেকে ১৪০টি পশ্চিমা ট্যাংক পেতে যাচ্ছে কিয়েভ। ১২টি দেশ জোটবদ্ধ হয়ে প্রথম দফায় ইউক্রেনকে এ যুদ্ধ ট্যাংক সরবরাহ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া দূরপাল্লার অস্ত্র রাশিয়ার ভূখন্ডে আঘাত হানতে ব্যবহার করা হবে না বলে কিয়েভের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কেবল রুশ সেনা ইউনিটগুলোকে নিশানা করা হবে বলে জানান ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
এদিকে প্রতিদিনের মতো রোববারও রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শব্দে ঘুম ভাঙে ইউক্রেনবাসীর। এদিন দেশটির খারকিভে রুশ সেনারা দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। এতে বিধ্বস্ত হয় একটি আবাসিক ভবন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন বলে জানায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়ে স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবনে। এতে ওই ভবনটিও দুমড়ে মুচড়ে যায়।
খারকিভের পাশাপাশি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে জেলেনস্কি বাহিনীর সঙ্গে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা ওয়াগনার গ্রুপের চলছে তীব্র লড়াই। গত কয়েক মাস ধরে বাখমুত শহর দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনারা। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে বাখমুত শহরের এই লড়াইকে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও রক্তক্ষয়ী হিসেবে দেখা হচ্ছে।