পেশোয়ারের মসজিদে ভয়াবহ বোমা হামলার পর পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের নৃশংস হামলা প্রমাণ করে যে, সন্ত্রাসবাদ দমনে ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান সরকার। পেশোয়ারের সুরক্ষিত এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মূলত আরও একবার নিজেদের সক্ষমতার জানান দিল পাকিস্তানে কার্যক্রম চালানো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো, যা অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক টানাপোড়েনে থাকা পাকিস্তানের জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, সোমবার (৩০ জানুয়ারি) পেশোয়ারের পুলিশ লাইনস এলাকায় একটি মসজিদের ভেতরে নামাজের সময়ই আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। হামলায় মসজিদের ছাদের একাংশ ধসে পড়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ জনে। গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও অনেকেই। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মসজিদে আত্মঘাতী হামলার পর পেশোয়ারজুড়ে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি। সরকারি অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, চলছে পুলিশি টহল। নৃশংস ওই হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নড়েচড়ে বসলেও, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন পাকিস্তানের জনগণ।
তারা বলছেন, মসজিদে ঢুকে হামলা চালানো ভয়ঙ্কর একটা বার্তা। সন্ত্রাসীরা বোঝাতে চাইছে যে তারা যেকোনো জায়গায় হামলা চালাতে সক্ষম, যা খুবই উদ্বেগের বিষয়।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের হামলা প্রশ্নের মুখে ফেলেছে দেশটির গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে। ঋণভারে কোণঠাসা পাকিস্তানের জন্য এ সন্ত্রাসী হামলা এক বড় ধাক্কা। দেশটির সরকার যদি অভ্যন্তরীণ অবস্থা স্থিতিশীল প্রমাণ করতে না পারে, তাহলে এইএমএফের সহযোগিতাও আটকে যেতে পারে।
সন্ত্রাসীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পেশোয়ারে গত কয়েক মাসে ধরে তেহরিক-ই-তালেবানের বিভিন্ন গোপন আস্তানায় অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সেই অভিযানের প্রতিশোধ নিতেই এ হামলা চালানো হয়েছে।
এর আগে গত বছরের মার্চে পেশোয়ারের একটি শিয়া মসজিদে জোরাল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সে হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৫৬ জন মুসল্লি। ওই ঘটনার জন্যও তেহরিক-ই-তালেবান বা টিটিপি-কে দোষারোপ করেছিল পাকিস্তান সরকার।