সময় টিভি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনার জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলেছেন, ‘গণমাধ্যমে বিএনপির দুর্নীতি প্রকাশ হওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চটেছেন।’
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন জয়। সেই পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, সম্প্রতি বিএনপির দুর্নীতিবাজ শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টিআইবির কর্মকর্তা, তার সূত্র ধরে সংবাদ প্রচার করেছে সময় টিভি। সেই সংবাদে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত-আর বিএনপির ২৭ দফার প্রথম দিকেই বলেছে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ার কথা, সেটি প্রচার করা হয়েছে।
জয় বলেন, এতেই চটেছেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল। কারণ তাদের লন্ডনে পলাতক নেতার পক্ষে কথা না বলায় সময় টিভির রিপোর্ট শুদ্ধ হয় নাই। এভাবেই দলের ভেতরে ও বাইরে বাকস্বাধীনতার চর্চা করে বিএনপি। যেমন তারা করেছিল, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে একাধিক পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ও একটি বেসরকারি টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়েছিল তারা।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে, বিএনপির গণতন্ত্র মানেই তারেক রহমান বা খালেদা জিয়ার শাসন ফেরত আনা, তাদের সেই হীন উদ্দেশ্য সফল করতে প্রধান বাধা আসলে গণমাধ্যম। কারণ এই গণমাধ্যমেই বিএনপির দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের স্বরূপ উত্থাপিত হয়েছে বার বার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় সময় সংবাদের সমালোচনা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা খুব অবাক, বিস্ময়, হতাশা এবং ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি সময় চ্যানেল একটি ফিচার সংবাদ করেছে যেটা সুস্থ সাংবাদিকতার সঙ্গে যায় না। এটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনের পেছনে ছুরিকাঘাত করা এবং পুরোপুরিভাবে পক্ষ অবলম্বন করা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেত্রী যিনি অতীতে তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং দেশের জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে। আমরা বার বার বলেছি তাকে কারাগারে নেয়া, তাকে সাজা দেয়া এর সবটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য সাজানো হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যতগুলো মামলা হয়েছে সেই মামলা সম্পর্কেও বলা হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি এসব মামলাগুলো সাজানো এবং তিনি যেন রাজনীতিতে যোগ দিতে না পারেন তার জন্য এ সাজা দেয়া হয়েছে।
এটা বলার পরে অন্যান্য চ্যানেল বা পত্রিকা যখন এই চলমান আন্দোলনকে জনগণের কথা তুলে ধরছে ঠিক তখন সময় চ্যানেল এ ধরনের একটি ডকুমেন্টরি প্রতিবেদনে প্রচার করেছে। এটা নিঃসন্দেহে অনভিপ্রেত মিথ্যাপ্রচার এবং আন্দোলনকে ছুরিকাঘাত করার মতো, বলেন তিনি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, সময় একটা মেইনস্ট্রিম চ্যানেল এবং এ দেশের মানুষ এই চ্যানেলের ওপর আস্থা রাখে ও বিশ্বাস করে। তাই আমি আশা করব সময় চ্যানেল এই প্রচারকে বন্ধ করবে এবং কোনো দলের প্রতি এ ধরনের বিদ্বেষমূলক সংবাদ প্রচার না হয় সেদিকে তারা খেয়াল রাখবে।
‘আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য আন্দোলন করছি না’ উল্লেখ করে ফখরুল আরও বলেন, আমরা জনগণের ভোটাধিকার ফেরত পাওয়ার আন্দোলন করছি। তাই এ ধরনের বিদ্বেষমূলক সংবাদ ফ্যাসিবাদিকে শক্তিশালী করবে। আমরা সুস্থভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করার প্রত্যাশা করব।