বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেররা তাদের মোট সম্পদের ৫ শতাংশও কর দিলে অন্তত ২০০ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে আনা সম্ভব হবে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংগঠন অক্সফামের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে এই বিষয়ে ‘সারভাইবাল অব দ্য রিচেস্ট’-শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে অক্সফাম।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, ‘সারভাইবাল অব দ্য রিচেস্ট’-শীর্ষক প্রতিবেদনে বলে হয়েছে, বিশ্বে ২০২০ সালের পর থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দুই বছরে সৃষ্টি হয়েছে ৪২ ট্রিলিয়ন বা ৪২ লাখ কোটি ডলারের নতুন সম্পদ। এর দুই তৃতীয়াংশই অর্থাৎ ২৮ লাখ কোটি ডলারই নিয়ন্ত্রণ করছে বিশ্বের ১ শতাংশ ধনী ব্যক্তি।
প্রতিদিন বিশ্বের এই ধনী ১ শতাংশ মানুষের অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে ২৭০ কোটি ডলার। বিপরীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির কারণে দুঃসহ জীবনযাপন করছে অন্তত ১৭০ কোটি মানুষ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেরদের অর্ধেকেরও বেশি এমন দেশে বসবাস করেন যেখানে সরাসরি তাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য কোনো কর আরোপ করার বিধান নেই।
তবে অক্সফাম বলেছে, তার বিশ্বের ধনকুবেরদের উত্তরাধিকারীদের কাছে অন্তত ৫ লাখ কোটি ডলার কর বের করে আনার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, এই অর্থ আফ্রিকা মহাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) থেকেও অনেক বেশি। এ বিষয়ে অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষ যখন খাদ্যের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে অতিধনীরা মেতে আছে তাদের আদিম উল্লাসে।’
বুচার আরও বলেন, ‘অতি ধনী এবং বড় বড় করপোরেশনগুলোর ওপর কর আরোপই হলো আজকের সর্বব্যাপী সংকটের সমাধানের পথ।’
সোমবার থেকে শুরু হওয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকে বিশ্বের অন্তত ৫২টি দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান এবং বৈশ্বিক করপোরেশনগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে ৬ শতাধিক প্রধান নির্বাহী উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, বৈঠক শেষ হবে আগামী শুক্রবার (২০ জানুয়ারি)।