কখনও ইঞ্জিনিয়ার, কখনও সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আত্মীয় পরিচয় দেন। নিজেই ফটোশপের মাধ্যমে তৈরি করেন ভুয়া নিয়োগপত্র। এভাবে চাকরি প্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ময়মনসিংহের কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের কামরুজ্জামান পড়াশোনা করেছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক্স আর্ট ইনস্টিটিউটে। স্বাভাবিকভাবেই গ্রাফিক্স ডিজাইনে তার দক্ষতা বেশ। তবে সেই দক্ষতাকে ভালো কাজে ব্যবহার না করে লাগিয়েছেন প্রতারণায়।
কয়েকজন সহযোগী নিয়ে তৈরি করেছেন প্রতারক চক্র। স্বাস্থ্য অধিদফতর, সংসদ সচিবালয়, ভূমি অধিদফতর, যুব উন্নয়ন এবং সমাজসেবা অধিদফতরে চাকরির ফাঁদ পাতেন তারা। নিয়োগপত্রগুলো এত নিখুঁত, যা প্রথম দেখে নকল বোঝার উপায় নেই। সংশ্নিষ্ট দফতরে চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে ভুক্তভোগীরা বুঝতে পারেন তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
চক্রের প্রধান কামরুজ্জামান নিজেকে প্রকৌশলী হিসেবে পরিচয় দেন। যদিও পড়ালেখা গ্রাফিক্স ডিজাইনে। ‘ব্ল্যাক রক’ নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি এনজিওর বাংলাদেশি প্রতিনিধি দাবি করেন। এনজিও থেকে বিভিন্ন রকম ভাতা দেয়ার নামেও করেন প্রতারণা।
কামরুজ্জামান সহযোগী নাজির প্রান্তিক দালাল। যার কাজ চাকরি প্রত্যাশীদের খুঁজে বের করা। রায়হান সাক্ষাৎকার নেন। গায়ে থাকে বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক। আরেক সহযোগী রোকনুজ্জামান চাকরি প্রার্থীদের ভুয়া মেডিকেল করান।
দুই সহযোগীসহ কামরুজ্জামানকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, তারা সবাই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে মানুষকে হয়রানি করছে কয়েকটি চক্র। এর মধ্যে ৩ জনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। গ্রেফতারকৃতরা প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা সেনাবাহিনী, ভূমি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে চাকরির প্রলোভন দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন।
এই চক্রে আরও একাধিক সদস্য রয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।