হিজাব ইস্যুতে ইরানজুড়ে চার মাস আগে শুরু হওয়া আন্দোলন এখন অনেকটাই থমকে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, যেখানে বিক্ষোভ সব থেকে বেশি সময় ধরে চলছিল সেখানে এখন কড়া পাহারা নিরাপত্তারক্ষীদের। বিরোধীদেরও সরকারবিরোধী সমাবেশ করতে দেখা যাচ্ছে না। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বার্তাসংস্থা এপির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
হিজাব না পরার কারণে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে নৈতিকতা পুলিশ। আটকের পর ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় ইরানজুড়ে। প্রথম থেকেই এর সঙ্গে যুক্ত হন দেশটির নারীরা। এটিকে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির শাসনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদী আন্দোলন হিসেবে আখ্যা দেয় দ্য ইকোনমিস্ট।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, দেশটিতে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। শীর্ষ ফুটবলার, চলচ্চিত্র তারকা, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। এর পাশাপাশি অনলাইনে সংবাদ প্রচার এবং ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থায় নজরদারি আগের চেয়ে বাড়িয়েছে প্রশাসন।
তবে বিক্ষোভের চার মাস পর ‘নারী, জীবন ও স্বাধীনতা’ নিয়ে সব আর্তনাদ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যেখানে বিক্ষোভ সব থেকে বেশি সময় ধরে চলছিল সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে এখন কড়া পাহারা বসিয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সরকারের প্রশংসামূলক অনেক ব্যানারে ভরে গেছে। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই হতাশ হয়ে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। এমনকি সরকারবিরোধীদের বেশির ভাগই এখন শান্ত।
বিক্ষোভ চলাকালে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি তেমন কিছু না বললেও বর্তমানে তিনি অনেকটাই সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। নারীদের বিশাল সমাবেশে অংশ নিয়ে দিচ্ছেন নানা উপদেশ। দেশের আলেমদের সঙ্গেও নিয়মিত আলোচনা করছেন তিনি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিক্ষোভ বন্ধ হলেও ইরানিরা এখনো ক্ষুব্ধ থাকায় স্বস্তির সুযোগ নেই আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির।