রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোল করা খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তার যা কীর্তি তার বড় অংশটাই তিনি করেছেন মাদ্রিদের রাজকীয় সাদা জার্সি গায়ে চড়িয়ে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নিজের সময় শেষ বুঝতে পেরে তাই সাবেক ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী। তবে তার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এমন খবর দিয়েছে দ্য অ্যাথলেটিক।
কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে শেষ হয়ে যায় পর্তুগালের অভিযান। মরক্কোর বিপক্ষে ১-০ গোলের হারে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হওয়ার কয়েকদিন পরেই খবর পাওয়া যায় মাদ্রিদে ফিরছেন ৩৭ বছর বয়সী মহাতারকা। গা ঝাড়া দিয়ে বসতেই জানা যায়, মাদ্রিদে ফের আগমন খেলার জন্য নয়, বরং সাবেক ক্লাবের মাঠে অনুশীলন করতেই এসেছেন রোনালদো। অনেকেই দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে সাদা জার্সিতে ফের এই পর্তুগিজ মহাতারকাকে দেখার স্বপ্ন দেখতে থাকে।
হয়নি তেমন কিছুই। বরং মাদ্রিদে বসেই রেকর্ড পারিশ্রমিকে সৌদি ক্লাব আল নাসরের সঙ্গে চুক্তি সই করেন রোনালদো।
তবে রোনালদো এত সহজে ইউরোপ ছেড়ে এশিয়ার ফুটবলে পা বাড়াতে চাননি। বরং শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন শীর্ষ পর্যায়ের কোনো ক্লাবে যোগ দিতে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রীড়া দৈনিক দ্য অ্যাথলেটিক জানিয়েছে, সৌদি ক্লাবে নাম লেখানোর কয়েকদিন আগ পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদে ফেরার চেষ্টা করে গেছেন মাদ্রিদকে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানো এই মহাতারকা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে আর থাকা হবে না বুঝতে পেরে মাদ্রিদে ফেরার চেষ্টা করতে থাকেন তিনি।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ হলে রোনালদো তার এজেন্ট হোর্হে মেন্দেজকে বলেছিলেন, তার জন্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলে এমন একটা ক্লাব খুঁজে দিতে। জুনে চেলসির নতুন মালিক টড বোহেলির সঙ্গে দেখা করে তাকে প্রায় রাজিও করে ফেলেন মেন্দেজ। তবে চেলসির তৎকালীন কোচ টমাস টুখেল তখন রাজি না হওয়ায় চুক্তি হয়নি আর। কথা বলেছিলেন বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গেও। তবে রোনালদো ক্লাবটির সিস্টেমের সঙ্গে কতটুকু খাপ খাওয়াতে পারবে এই শঙ্কা থেকে আলাপ বারানি ক্লাবটির প্রধান নির্বাহী অলিভার কান।
অ্যাথলেটিকের খবরে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মকালীন দলবদলেই রোনালদোকে দলে ভেড়ানোর জন্য মাদ্রিদিকে কয়েকবার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা সে প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। এ সময় এমনকি বলা হয়েছিল যে, রোনালদোর বেতনের বড় একটা অংশ বহন করবে ইউনাইটেড। তারপরও শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলো আগ্রহ প্রকাশ করেনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে দলে নেওয়ার বিষয়ে।
এরপর আগস্টে যখন মাদ্রিদ সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে রোনালদোর ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন, ‘আবারও? ওর বয়স এখন ৩৮’
শেষ পর্যন্ত আর ইউরোপে থাকা হয়নি রোনালদোর। ত্যাগ করতে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার আশাও। তবে চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের দল নিউক্যাসল ইউনাইটেড যদি সেরা চারে থেকে শেষ করতে পারে তবে আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দেখা যেতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজাকে।